ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অস্ত্র জেনুইন নয়, অপারেশনে যাচ্ছে সেই ময়ুরপঙ্খী

ইসমাইল হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯
অস্ত্র জেনুইন নয়, অপারেশনে যাচ্ছে সেই ময়ুরপঙ্খী বিমানের বোয়িং প্লেন ময়ুরপঙ্খী। ফাইল ফটো

ঢাকা: চট্টগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছিনতাইয়ের কবলে পড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্লেন ‘ময়ূরপঙ্খী’তে কোনো বিস্ফোরক ও আসল অস্ত্র ছিল না বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

আর সেই প্লেনটির ক্ষতি হওয়া অংশগুলো মেরামত করে আগামী ৮-১০ দিনের মধ্যে উড়াল উপযোগী করে তোলা হবে বলেও জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতোমধ্যে প্লেনটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়েছে।

 
 
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বিমানের বিজি-১৪৭ ফ্লাইটটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে পাইলট তা জরুরি অবতরণ করান। ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম থেকে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উড্ডয়নের পরপরই ছিনতাই চেষ্টার ঘটনা ঘটে। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় ছিনতাইচেষ্টাকারী ‘মাহাদী’। পরে যাকে শনাক্ত করা হয় পলাশ নামে। ছিনতাইয়ের কবরে পড়া ‘ময়ূরপঙ্খী’ বিস্ফোরক ভেস্ট পাওয়া যায়, যা ছিল প্লাস্টিক।  ছবি: সংগৃহীতপ্লেনটি ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনায় নিরাপত্তা ও সার্বিক দিক নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
 
তদন্ত কমিটি এখনও প্রতিবেদন না দিলেও মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক বুধবার বাংলানিউজকে বলেন, ‘টুকিটাকি কিছু খবর আছে। তবে কোনো অস্ত্র ছিল না, বিস্ফোরকও ছিল না। এ দু’টি বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। ’
 
তিনি বলেন, প্লেনে কোনো ক্ষতিকর কিছু যাওয়ার সুযোগ নেই। পাইপগুলো ছিল প্লাস্টিকের। তার উপরে লাল টেপ জড়ানো হয়েছে। যে তার ছিল, দেখবেন কোনো লাগেজে হেডফোন এবং ফোন চার্জার প্রত্যেকের কাছেই থাকে। এগুলো কারো দৃষ্টি এড়িয়ে গেল কিনা- আমরা পরীক্ষা করে দেখছি।
 
‘আমরা কমিটি গঠন করেছি, তারা কাজ করছে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এর উত্তর সঠিকভাবে দেয়া যাবে। একটি বিষয় নিশ্চিত যে, কোনো এক্সপ্লোসিভ ও জেনুইন কোনো অস্ত্র যায়নি। যা কিছু পাওয়া গেছে খেলনা পিস্তল। আর এক্সপ্লোসিভের যে কথা বলা হয়েছিল সেগুলো প্লাস্টিকের পাইপ। ’
 
রিপোর্ট হয়ে যাওয়ার পরে সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিক জানানো হবে বলেও জানান বিমান সচিব।
 
মহিবুল হক বলেন, বিমানে বোর্ডিং নিতে হলে ফটো আইডি নিতে হয়, এটা আগেও দিতে হতো। অনেক সময় এটা হয়তো কেউ সিরিয়াসলি করেনি, কিন্তু এটা এখন আমরা কঠিনভাবে নজরদারি করবো।
‘আপনি বিমানে উঠবেন আপনাকে একটা পরিচয় দিতে হবে- আপনি আসলেই এই লোক কিনা? এইগুলো স্ট্রিক্টলি ফলো করা হবে। ’
 
কমান্ডো অভিযানে নিহত ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন কিনা- প্রশ্নে বিমান সচিব বলেন, ‘তা তো বটেই। তা না হলে কেউ বিয়ের কাবিননামা নিয়ে ঘুরে? কাবিননামার ছবি আমাদের কাছে আছে। ’

তিনি বলেন, প্লেনের যে পার্সগুলো নিয়ে সমস্যা হয়েছে সেগুলো বোয়িং থেকে চলে এসেছে। সুইচ বোর্ডসহ অন্য দু’একটি জিনিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। প্লেনটি আদালতের জিম্মায় ছিল। এটি এখন অপারেশনে চলে যাবে। অপারেশনে চলে যেতে ৮-১০ দিন সময় লাগতে পারে। কারণ বিমানের মেজর কোনো ক্ষতি হয়নি।
 
‘যখন কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, সেটি বিমানে (প্লেন) হোক বা বিমানের (প্লেন) বাইরে হোক; যদি কোনো আলামত থাকে সেই আলামত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তার হেফাজতে নিয়ে যায়। পরবর্তী আবেদনের প্রেক্ষিতে ওনারকে (মালিক) দেয়া হয়। ঠিক একইভাবে এই প্লেনটিও তদন্তকারী কর্মকর্তা তার নিজ হেফাজতে নিয়েছেন এবং পরবর্তীতে আবেদনের প্রেক্ষিতে প্লেনটি বিমানের জিম্মায় দেয়া হয়। ’
 
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্লেনটি বাংলাদেশ বিমানের জিম্মায় এবং ঢাকায় চলে এসেছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯
এমআইএইচ/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।