ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

চকবাজারে ঝুলছে গোডাউন ভাড়ার বিজ্ঞাপন!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৯
চকবাজারে ঝুলছে গোডাউন ভাড়ার বিজ্ঞাপন!

ঢাকা: রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর পুরান ঢাকাকে কেমিক্যাল গোডাউনমুক্ত করার ঘোষণা দিলেও আশপাশের কোনো এলাকা থেকেই গোডাউন অপসারণ কর্মকাণ্ড চোখে পড়ছে না।

অথচ সিটি করপোরেশন বলছে, পুরান ঢাকাকে কেমিক্যাল গোডাউনমুক্ত করার শুরুতেই সবার আগে চকবাজারকে কেমিক্যাল গোডাউনমুক্ত করা হবে।  

তবে ঘোষণা অনুযায়ী ওয়াহেদ ম্যানশনের বেজমেন্ট থেকে কেমিক্যাল অপসারণ হলেও গত ক'দিনে অন্য কোথাও অভিযান চালানো হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

 

এদিকে, চকবাজারের অলি-গলিতে ঝুলছে গোডাউন ভাড়ার বিজ্ঞাপন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভবনের বেজমেন্ট প্রথম তলা ও দ্বিতীয় তলায় গোডাউন ভাড়ার বিজ্ঞাপন দেখা গেছে। চকবাজারের উর্দু রোডের একটি বিজ্ঞাপন দেখে উল্লেখিত নম্বরে যোগাযোগ করা হলে শুরুতেই ওই ব্যক্তি জানতে চাইলেন কিসের গোডাউন? কেমিক্যাল জাতীয় পণ্যের কথা শুনার পরেও ভাড়ার বিষয়ে কথা বলতে নির্ধারিত জায়গায় দেখা করতে বলেন। এরপর কথা বাড়ালে বিষয়টি টের পেয়ে পরক্ষণেই ওই ব্যক্তি বলেন ‘গোডাউন ভাড়া হয়ে গেছে’।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ওয়াহেদ ম্যানশনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের দু’দিন পর সন্ধান পাওয়া যায় ভবনের বেজমেন্ট গোডাউনের। সেখানে মজুদ ছিল বিপুল পরিমাণ কেমিক্যাল পণ্য। ওই জায়গায় আগুন পৌঁছালে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়তো বলে মনে করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। বেজমেন্ট থেকে সিটি করপোরেশন ২৮ ট্রাক পরিমাণ কেমিক্যাল পণ্য উদ্ধার করে।  কেমিক্যালগুলো কালো হয়ে গেলেও অক্ষত রয়েছে।  ছবি: বাংলানিউজ ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভবনের প্রথম তলায় আরো একটি কেমিক্যাল গোডাউনের সন্ধান পাওয়া গেছে। যেটি ভবনের পেছনের দিকে হওয়ায় সাটার বন্ধ অবস্থায় অক্ষতই রয়েছে।  

মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এ গোডাউনের সন্ধান পান।  

গোডাউনটিতে গিয়ে দেখা গেছে, বিপুল পরিমাণ কেমিক্যাল পণ্য মজুদ রয়েছে সেখানে। দাহ্য কেমিক্যাল ভর্তি গ্যালনের সারিসহ থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে রংয়ের বিভিন্ন দাহ্য উপকরণ। প্রথম তলার সামনের দিকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পেছনের দিকে আগুন পৌঁছায়নি। ফলে কেমিক্যালগুলো কালো হয়ে গেলেও রয়েছে অক্ষত।  

ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, আগুন সাধারণত উপরের দিকে যায়। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের তৎপরতায় ভবনটির পেছনের এ কেমিক্যাল গোডাউন ও বেজমেন্টের গোডাউন অক্ষত রয়েছে। এগুলোতে আগুন ছড়ালে পরিণতি হতো ভয়াবহ।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, অগ্নিকাণ্ডের জায়গার অদূরে আজগর আলী লেনের ৩৪ নম্বর ভবনটিতে কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে। তথ্য অনুযায়ী সেই 'মোহাম্মদীয়া কেমিক্যাল' নামের দোকানটিতে গেলেও বন্ধ পাওয়া গেছে। পাশের দোকানের কর্মীরা জানান, অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে দোকানটি বন্ধ রয়েছে।  

পুরান ঢাকার নিমতলী অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক নিহতের ঘটনায় প্রশ্ন উঠে আবাসিকে কেমিক্যাল গোডাউন নিয়ে। এরপর আবাসিক এলাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন সরিয়ে ফেলার তৎপরতাও শুরু করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সেই তৎপরতা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি বলেই ১০ বছর পর আরো এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী হলো পুরান ঢাকাবাসী। তবে এবারো শুরু হওয়া তৎপরতা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হবে, এমনটি আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৯
পিএম/টিএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।