ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চকবাজার ট্র্যাজেডি: ১৪ মরদেহ শনাক্তে সময় লাগবে ১৫ দিন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৯
চকবাজার ট্র্যাজেডি: ১৪ মরদেহ শনাক্তে সময় লাগবে ১৫ দিন সংবাদ সম্মেলন, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ৬৭ জনের মধ্যে ৪৮ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ১৯টি মরদেহ শনাক্তকরণে এখন পর্যন্ত ৩৮ স্বজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

১৯টি মরদেহের মধ্যে ১৪টি মরদেহ শনাক্তকরণে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মতো সময় লাগবে। বাকি চারটি মরদেহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অন্তত তিন সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালীবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার।

তিনি বলেন, ৬৭ টি মরদেহের মধ্যে ১৯ টি এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। বাকি মরদেহ শনাক্ত করে জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একই মরদেহের একাধিক দাবিদার হিসেবে ১৯ টি মরদেহের বিপরীতে ৩৮ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

এর মধ্যে ১৪টি মরদেহের মাসল স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে, যেগুলোর পরিচয় নিশ্চিত হতে সর্বোচ্চ ১৫ দিন সময় লাগবে। বাকি চারটি মরদেহের অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ায় সেগুলোর হাড়ের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো থেকে স্যাম্পল সংগ্রহের পর্যায়ে আসতেই অন্তত তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। এরপর ডিএনএ ম্যাচিংয়ের বিষয়টি আসবে।

অগ্নিকাণ্ড স্থলের বিষয়ে সিআইডি কোনো পরীক্ষা করবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের মহাখালীতে কেমিক্যাল ল্যাব রয়েছে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত দফতর ফায়ার সার্ভিস যদি আমাদের সহায়তা চায়, তাহলে সেসব স্যাম্পল পরীক্ষায়ও সহায়তা করা হবে।

পরবর্তীতে কোনো পরিবার মদেহের দাবি জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৬৭ টি মরদেহের স্যাম্পলই আমাদের কাছে রয়েছে এবং এটা যুগ যুগ ধরে সংরক্ষিত থাকবে। কোনো পরিবার যদি পরবর্তীতে দাবি জানায়, তাহলে তখন পরীক্ষা করা হবে, তবে এই চ্যালেঞ্জের বিষয়টি অবশ্যই আদালতের মধ্যদিয়ে আসতে হবে।

এর আগে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আক্তার তিনি বলেন, চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিচয় শনাক্তে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ শুরু করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে ৬৭ টি মরদেহ থেকে ২৫৬ টি (রক্ত, টিস্যু, হাড় ও বাক্কাল সোয়াব) ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি একটি বিচ্ছিন্ন পৃথক হাতকে পৃথক আলামত হিসেবে গণ্য করে সেটি থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর ফলে মোট সংগৃহীত নমুনার পরিমান দাঁড়ায় ২৫৭টি।

শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থাপিত অস্থায়ী বুথের মাধ্যমে মরদেহের দাবিদারদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়। সর্বশেষ রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ৩৮ স্বজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। অশনাক্তদের পরিচয় নিশ্চিত হতে সিআইডির ফরেনসিক টিম ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছে। সিআইডির ডিএনএ ল্যাব টিম সর্বোচ্চ দ্রুততার সঙ্গে ডিএনএ পরীক্ষা করে অশনাক্তদের পরিচয় শনাক্তের কাজ শেষ করবে।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৬৭ জন পুড়ে মারা যায়। চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানশনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আবাসিক ভবনটিতে কেমিক্যাল গোডাউন থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৯
পিএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।