ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আবারও সেই ‘কঠোর ব্যবস্থা’

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯
আবারও সেই ‘কঠোর ব্যবস্থা’ পোড়াবাড়িতে পরিণত হয়েছে চকবাজারের ওই এলাকা। ছবি: বাংলানিউজ

চকবাজার থেকে: আগের মতো এবারও তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থার কথা জানিয়েছেন সরকারের মন্ত্রীরা। নিমতলী অগ্নিকাণ্ডেও তারা একই কথা বলেছিলেন। কিন্তু এর ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও তেমন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেমিক্যাল কারখানা সরানোর বিষয়ে। 

অগ্নিকাণ্ডের পর বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত সড়কের চুড়িহাট্টা মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় যান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লী‌গের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কা‌দের।

পরে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রোগীদের দেখতে যান তিনি।

এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তদন্তের পর সরকার পুর‌নো ঢাকায় কেমি‌ক্যাল কারখানা পু‌রোপু‌রি উ‌চ্ছে‌দ কার্যক্র‌মে (এভিকশন ড্রাইভ) যা‌বে।  
 
এ সময় তার স‌ঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও উপ‌স্থিত ছি‌লেন।

‌ওবায়দুল কা‌দের ব‌লেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সাহায্য পুনর্বাসন এবং নিহতদের সাহায্যের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজে দায়িত্ব নিয়েছেন। যারা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন তাদের চিকিৎসার ব্যাপারেও তিনি (শেখ হাসিনা) দায়িত্ব নিয়েছেন।

পু‌রনো ঢাকায় ঘিঞ্জি পরিবেশ থে‌কে কেমিক্যাল কারখানা সরা‌নোর নির্দেশনা ছিল- এ বিষয়ে তার পাশে থাকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ২০০৯ সালের নিমতলীর ঘটনার পর আমরা বলে আসছি ওখান থেকে কেমিক্যাল গুদাম সরিয়ে নিতে। এরপরও আবার চলে আসছে।  

‘তাই এখন মেয়র মহোদয় পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি আর লাইসেন্স রিনিউ করবেন না। এখন পর্যন্ত আমি যতটুকু জানি তিনি একটা পদক্ষেপ নেবেন এসব কারখানা সরিয়ে দেয়ার জন্য। ’

অবৈধ কেমিক্যাল কারখানায় উচ্ছেদে কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কি না? জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনি নিশ্চয়ই ওই এলাকায় দেখেছেন ওখানে কোথায় কিভাবে কে থাকে তা বের করা বড় মুশকিল। মেয়র মহোদয় দিক-নির্দেশনা দিলে আমরা এগুলো সব ক্লিয়ার করে দিতে পারবো।

তবে ভুক্তভোগী ও স্থানীয় লোকজন বলছেন, সরকারের মন্ত্রীরা দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে এসে শুধু সান্ত্বনার বাণী-ই শুনিয়ে যান। আদতে কোনো ব্যবস্থাই নেননি তারা। নিমতলী ট্র্যাজেডির পর পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল কারখানা সরানোর কার্যকর উদ্যোগ নিলে নতুন করে আবারও সেই মর্মান্তিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতো না।  

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত সাড়ে ১০টার পর চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানশনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। পরে তা আশপাশের কয়েকটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।  

পড়ুন>>চকবাজারে আগুন: বেড়েই চলেছে লাশের সারি

এতে এ পর্যন্ত ৭০জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪১জন।  
    
এলাকাবাসী বলছেন, ওই ভবনের কারখানা থেকে আগুন ছড়িয়েছে। কারও কারও মতে, বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়ায়। ওয়াহিদ ম্যানশনের নিচতলায় প্লাস্টিকের গোডাউন ছিল। ওপরে ছিল পারফিউমের গোডাউন।

খবর পেয়ে এ আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।  

তবে ঘটনাস্থলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উদ্ধার কাজ সমাপ্ত করেন।  
  
বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯
আরএম/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।