ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারের কাজ চলমান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯
রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারের কাজ চলমান সংসদ ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারের কাজ এখনো চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ঘটনা নিয়ে সিআইডির তদন্তও চলমান আছে। এ বিষয়ে যখনই অগ্রগতি হবে তখনই সংসদকে জানানো হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ৩০০ বিধিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী এসব কথা জানান।

বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের ব্যাংকসমূহ এবং আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপনায় আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ব্যবস্থা তারাই করে থাকেন। বাংলাদেশের ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভটি যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল ব্যাংক অব নিউইয়র্কে সংরক্ষণ করা হয়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশের রিজার্ভই সেখানে সংরক্ষিত থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ২০১৬ সালে জানুয়ারিতে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংকে সংরক্ষিত আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের একটি অংশ শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইনে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে পাচার করা হয়। তথ্য প্রযুক্তির অপব্যহারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক হ্যাকাররা ৭০টি ভুয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৯৫১ মিলিয়ন ইউএস ডলার পাচারের চেষ্টা করে। এরমধ্যে ৫টি মিথ্যা চেকের মাধ্যমে ১০১ মিলিয়ন ডলার ট্রান্সফার করার পর নিউইয়র্কের ফেডারেল ব্যাংক সন্দিহান হলে বাকি পেমেন্টগুলো করতে পারেনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, রিজার্ভ চুরির বিষয়টি নজরে আসার সাথে সাথে আমাদের সরকার চুরি হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধার, চুরি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিতকরণ ও ভবিষ্যতে চুরি রোধে সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি দ্রুত সরকারের নিকট একটি রিপোর্ট পেশ করেন। পাশাপাশি সিআইডিকে অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সিআইডি’র তদন্ত এখনো চলমান আছে। ফৌজদারি কার্যকরে যেন কোন প্রভাব না পড়ে সেজন্য রিপোর্টটি এখনো প্রকাশ করা হয়নি। রিজার্ভ চুরির বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং বিদেশি একাধিক প্রতিষ্ঠান জড়িত আছে। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে ইউএস এর এফবিআই এবং ফিলিপাইন সরকার তদন্তে নামে। এরই ধারাবহিকতায় শ্রীলঙ্কা থেকে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করা হয় এবং  ফিলিপাইন থেকে ১৪ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত আনা হয়েছে। বাকি ৬৬ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উদ্ধারে এখনো কার্যক্রম চলমান আছে।  

মুস্তফা কামাল আরো বলেন, এফবিআই নিজ দেশের হ্যাকারদের বিরুদ্ধে মামলা করে এবং ফিলিপাইনে অ্যান্ট্রি মানিলন্ডারিং কাউন্সিল মানিলন্ডারিং এ জড়িতদের  বিরুদ্ধে মামলা করে। এখান থেকে আমরা পর্যাপ্ত প্রমাণাদি পেয়েছি এবং প্রমাণাদিসহ ২০১৮ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি আইনি প্রতিষ্ঠান ‘কোজেন অব অনার’কে দায়িত্ব দেওয়া হয়। যারা গত জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পক্ষে মামলা দায়ের করেছে। এখানে উল্লেখ্য যে, নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে আমরা মামলাটি দায়ের করতে পেরেছি। চুরি যাওয়া রিজার্ভ অর্থ উদ্ধারের কাজ এখনো চলমান আছে। এ বিষয়ে যখনই কোনো অগ্রগতি হবে এই সংসদকে অবহিত করব।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯ 
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।