ঢাকা, শুক্রবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চালু হচ্ছে রাজশাহীর রেশম কারখানায় আরও ৫ লুম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
চালু হচ্ছে রাজশাহীর রেশম কারখানায় আরও ৫ লুম রাজশাহীর রেশম কারখানায় আরও ৫ লুম চালু হচ্ছে। ছবি : বাংলানিউজ

রাজশাহী: রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী রেশম কারখানায় আরও পাঁচটি লুম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকা লুমগুলো পর্যায়ক্রমে ঘঁষে-মেজে চালুর উপযোগী করে তোলা হচ্ছে। এর আগে গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে কারখানার ৬টি লুম চালু করা হয়।

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার রাজশাহী রেশম কারখানা পরিদর্শনে আসেন এবং বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। এ সময় বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আবদুল হাকিম তাদের আরও পাঁচটি লুম চালুর তথ্য জানান।

পরে তারা বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটও পরিদর্শন করেন। সেখানে রেশমবোর্ড আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী উপস্থিত থাকেন। সভায় রেশম বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আবদুল হাকিম সভাপতিত্ব করেন।  

এতে বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মনসুর আলম, রেশম বোর্ডের সদস্য নাছিমা খাতুন, এমএ হান্নান, সচিব জায়েদুল ইসলাম, প্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জানানো হয়, রেশম কারখানায় এখন পরীক্ষামূলকভাবে ৬টি লুম চলছে। লুমগুলো এ পর্যন্ত ২ হাজার ৬০০ গজ কাপড় উৎপাদন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বলাকা, স্পান সিল্ক থান, কোরা বলাকা, গরদ কাপড় ও থান কাপড়। আরও ৫টি লুম চালুর উপযোগী করে তোলা হচ্ছে। আগামী এক মাসের মধ্যেই এ কাজ সম্পন্ন হলে উৎপাদন সংখ্যা আরও বাড়বে।

রেশম বোর্ড কর্মকর্তারা জানান, এখন পর্যন্ত রেশম বোর্ডের নিজেদের উৎপাদিত গুটিতেই কারখানায় রেশম কাপড়ের উৎপাদন চলছে। কারখানার সবগুলো লুমই তারা চালু করতে চান। তবে এ জন্য আরও বেশি পরিমাণে রেশম গুটি প্রয়োজন। তাই গুটির উৎপাদন বাড়াতেও তাদের কাজ করতে হচ্ছে। যত বেশি কাঁচামাল উৎপাদন বাড়বে, ততই বেশি সংখ্যক লুম চালু করা হবে।

এ ব্যাপারে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দিয়ে সভায় সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, রেশম রাজশাহীর ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে রেশম বোর্ডকে যেভাবে সহযোগিতা করা প্রয়োজন তা করা হবে।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় ১৯৬১ সালে সাড়ে ১৫ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত হয় এ রেশম কারখানা। রেশমের উন্নয়নে রাজশাহীতেই স্থাপন করা হয়, বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড এবং বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয়।

কিন্তু এক কোটি ১৩ লাখ টাকা ঋণের বোঝা মাথায় রেখে ২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার কারখানাটি বন্ধ করে দেয়। এতে বেকার হয়ে পড়েন কারখানার প্রায় ৩০০ জন শ্রমিক। সে সময় অনেক আন্দোলন করেও কারখানাটি চালু করতে পারেনি রাজশাহীবাসী। দীর্ঘদিন পর রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা রেশম বোর্ডের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কারখানাটি চালুর উদ্যোগ নেন। তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় গত বছরের ২৭ মে পরীক্ষামূলকভাবে কারখানার ৫টি লুম চালু করা হয়। পরে আরও একটি চালু হয়।

বর্তমানে আরও ৬টি লুম চালুর প্রক্রিয়া চলছে। বন্ধ ঘোষণার সময় কারখানায় মোট ৬৩টি লুম ছিল। এর মধ্যে ৩৫টি পুরনো লুমে উৎপাদন চলতো। নতুন ২৮টি লুম চালুর আগেই কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বন্ধের আগে কারখানাটি বছরে এক লাখ ৬ হাজার মিটার রেশম কাপড় উৎপাদন করতো।

কারখানায় ৬৩টি লুম চালু হলে বছরে দুই লাখ ৮৭ হাজার মিটার রেশম কাপড় উৎপাদন করা যাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
এসএস/এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।