ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘উপজেলা পর্যায়েও মাস্টারপ্ল্যান, ফসলি জমিতে বসতবাড়ি নয়’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৯
‘উপজেলা পর্যায়েও মাস্টারপ্ল্যান, ফসলি জমিতে বসতবাড়ি নয়’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ফাইল ফটো

ঢাকা: ভূমি ব্যবস্থাপনায় কঠোরতা এনে অপরিকল্পিত উন্নয়ন ঠেকানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য উপজেলা পর্যায়ে উন্নয়নের মাস্টারপ্ল্যান করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, আগেও আমি একটা নির্দেশনা দিয়েছিলাম। তবে সেভাবে কার্যকর হয়নি।

সেটা হলো- উপজেলায় একটা মাস্টারপ্ল্যান করে দেওয়া। এখন কারো টাকা থাকলেই ধানি জমি নষ্ট করে দালান তুলছে। কোনো হিসাব-নিকাশ নেই। এখন থেকে আমরা যেনো এটা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করি। বিশেষ করে কোথায় বসতবাড়ি হবে। যেখানে ভিটেবাড়ি আছে সেটা আলাদা কথা। কিন্তু চট করে ফসলি জমি নিয়ে যখন বাড়িঘর করে ফেলে তখনই সমস্যা।

রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেখা যাচ্ছে যে যেখান থেকে দাবি করছে, সেখানে রাস্তা হচ্ছে। সেটা না করে আমরা যদি এটা পরিকল্পিতভাবে করতে পারি, তবে বেশি মানুষ এটার সুবিধা পাবে। যেহেতু প্রচুর রাস্তা হয়ে গেছে, এতেতো আমাদের কিছু করার নেই। সবচেয়ে মুশকিল হচ্ছে রাস্তাগুলো রক্ষণাবেক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা না থাকলে এক সময় সেই রাস্তা আর কাজে লাগে না।

‘এজন্য বলেছি আমরা যদি তৃণমূল পর্যায়ে একটা মাস্টারপ্ল্যান করে দেই, এখনও যেটুকু সময় আছে আমরা অনেক দ্রুত উন্নত করতে পারবো। ’

তিনি বলেন, আমরা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যতটুকু কাজ এগিয়ে ছিলাম, মাঝখানে ৭ বছরে আমরা যখন ছিলাম না এসময়ে অনেক কিছু নষ্ট হয়ে যায়। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময় হাতে পেয়েছিলাম বলে অনেকগুলো কাজ করতে পেরেছি। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা।

‘সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে গেলে আমাদের সমন্ত পরিকল্পনা নিতে হবে তৃণমূল পর্যায়ে যে মানুষগুলো বাস করে তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা, তাদের জীবনমান উন্নত করা। এটা করতে পারলে স্বাভাবিকভাবেই আস্তে আস্তে সমস্ত দেশটাই উন্নত হবে। সেদিকে লক্ষ্য করে এই মন্ত্রণালয়টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বাজেটের সবচেয়ে বড় টাকার অংশটাই এই মন্ত্রণালয়ে আসে। ’

তিনি বলেন, অনেকগুলো কাজ রয়ে গেছে। যেগুলো আমাদের করতে হবে। আমি সব সময় চিন্তা করেছি কীভাবে মানুষের কাছে যাওয়া যায়। মানুষের কাজটা করা যায়। এই মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে সুপেয় পানির নিশ্চয়তা দেওয়া। স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা। সেই সঙ্গে আবার রাস্তাগুলোকেও উন্নত করতে হয়। বহুমুখী কাজ, আবার জনস্বাস্থ্যের দিকেও গুরুত্ব দেওয়া। আমি মনে করি যতগুলো মন্ত্রণালয় আছে এই মন্ত্রণালয়টা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়।  

‘যারা অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে বারবার ক্ষমতায় এসেছিল তাদের মধ্যে দেশগড়ার চেতনটাই ছিল না। এর ফলে দেশটা অনেক পিছিয়ে ছিল। তৃতীয়বারের মতো এসে এটুকু সান্ত্বনা পেলাম যে আমরা কিছু কাজ করার সুযোগ পেলাম। তাই বাজেট প্রণয়নের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে আমরা মানুষের কাছে কীভাবে পৌঁছাতে পারি। ’


প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীতে আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে বাজেট করবো ঠিকই। কিন্তু এরপরও আমি চাচ্ছি দায়িত্ব দিয়ে দেবো আমাদের প্রতিটি জেলায়। তারা বলবে ওই অঞ্চলের কী চাহিদা, কীভাবে মানুষের কাছে সেবা পৌঁছাতে পারে। তাদের কাছ থেকে মতামত ও পরিকল্পনা আমরা নেবো। এভাবে পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটা স্তর থেকে আমরা বাজেট কীভাবে হবে সেই ধারণাটা নিয়ে বাজেট তৈরি করবো। যাতে প্রতিটি পয়সা মানুষের কল্যাণে কাজে লাগে। সেজন্য চিন্তা-ভাবনা আমাদের আছে।

‘আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করে স্থানীয় সরকারকে আরও শক্তিশালী করা। যাতে তারা নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে আরও বেশি মনোনিবেশ করতে পারে ও অবদার রাখতে পারে। বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া উন্নয়নও টেকসই হবে। ’

এর আগে সকাল সোয় ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে এলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান।

****সংবিধান লঙ্ঘনকারীদের কারণে দেশ বারবার পিছিয়ে গেছে
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৯
আরএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।