ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাঘাইছড়িতে অনির্দিষ্টকালের বাজার বর্জনে দুর্ভোগ চরমে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৯
বাঘাইছড়িতে অনির্দিষ্টকালের বাজার বর্জনে দুর্ভোগ চরমে

রাঙামাটি: রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় জেএসএস সংস্কার নেতা বসু হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সন্তু গ্রুপের জেএসএস’র ডাকে পূর্ব ঘোষিত উপজেলার চারটি হাট-বাজার বর্জনের ১৬ দিন পার হচ্ছে। 

বাজার বর্জনের কারণে উপজেলার ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি ক্রেতা সাধারণও। এ নিয়ে ব্যবসায়ী এবং ক্রেতারা ব্যাপকভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

 

বাজার বর্জনকারী ব্যবসায়ীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন. ‘আমাদের পেটে ভাত না থাকলে কেউ ভাত দিতে আসবে না। একটি সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী দলের জন্য প্রাণের ভয়ে হাট-বাজারে যেতে পারছি না। কারণ তারা আমাদের বলে দিয়েছেন যেন হাটবাজারে না যাই। এখন তাদের কথা শুনবো নাকি নিজের পেটে ক্ষুধা মেটানোর জন্য বাজারে যাবো। বাজারে গিয়ে বেচা-কেনা করতে না পারলে খাবো কি?’

ক্রেতা সাধারণের অভিযোগ, ‘সন্ত্রাসীরা তাদের স্বার্থে কিছুদিন পর পর বাজার বর্জনের মতো কর্মসূচির ডাক দেয়। এতে আমরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমরা বাজার করতে না পারলে কি খেয়ে বাঁচবো? সন্ত্রাসীরা তো আমাদের খাবার এনে দিবে না। ’ এসব ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলেন ভুক্তভোগীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আওতাধীন প্রতি শনিবার এবং বুধবার হাটবাজারগুলো জমে উঠে। কিন্তু জেএসএস’র বাজার বর্জন কর্মসূচির কারণে উপজেলার করেঙ্গাতলী, মারিশ্যা, উপজেলা সদর মার্কেট এবং দূরছড়ি হাটবাজারগুলো দীর্ঘ ১৬ দিন ধরে জমে উঠছে না। হাটের দিনে হাটবাজার শূন্য হয়ে থাকে। কোনো ক্রেতা সাধারণের দেখা মিলে না। স্থানীয়  কিছু মুদির দোকান খোলা থাকে নামে মাত্র। বাঙালিরা বাজারে আসলেও পাহাড়িদের দেখা মেলা ভার।

এদিকে বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দীন আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, পাহাড়ের দু’টি গ্রুপের মধ্যে অন্তর্কোন্দলের জেরে হত্যার ঘটনায় উপজেলার সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। হাটবাজার বর্জনের মতো কর্মসূচির কারণে সাধারণ ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং ক্রেতার দুর্ভোগে পড়েছে।  

এ ধরণের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশাসনকে এগিয়ে আসার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।

গত ৪ জানুয়ারি (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার বাবু পাড়াতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে এমএনলারমা দলের যুব সমিতির নেতা বসু চাকমা নিহত হন। এ ঘটনায় বসুর স্বজন প্রভাত কুসুম চাকমা বাদী হয়ে জেএসএস (সন্তু) দলের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বড় ঋষি চাকমাকে প্রধান আসামি করে ২৭ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয় সন্তু গ্রুপের জেএসএস মামলা দায়েরের পর জেএসএস সংস্কার নেতা বসু চাকমা হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গত ১৬ জানুয়ারি (বুধবার) ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক দেয়। অবরোধ কর্মসূচি পালনের পর তাদের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাজার বর্জন কর্মসূচির ডাক দেয়। এরপর থেকে দীর্ঘ ১৬ দিন ধরে উপজেলার চারটি হাটবাজার বন্ধ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৯
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad