ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

না’গঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৯
না’গঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুরে এলাকাবাসীর পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। 

পুলিশের দাবি, বন্দর উপজেলায় মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতার করার পর আসামিপক্ষের লোকজন তাদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।  এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার (১২ জানুয়ারি) রাত সাড়ে আটটার দিকে বন্দর থানা পুলিশের একটি দল বন্দর উপজেলার মদনপুরের চাঁনপুর এলাকায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতার করতে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য খলিলুর রহমানের সমর্থক দিপু ও সুজন নামে দুই আসামিকে আটক করে। খবর পেয়ে দিপু ও সুজনের সহযোগীরা এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় পুলিশের দুইটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ও আত্মরক্ষার্থে পুলিশ কয়েকরাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। সংঘর্ষের সময় আশিকুর রহমান নামে এক গার্মেন্টস কর্মী নিহত ও বাবুল নামে এক যুবককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সংঘর্ষের সময় পুলিশের এসআই মোহাম্মদ আলী, কনস্টেবল দেবাশীষ, মনোয়ার, মোহনসহ অন্তত অধর্শত আহত হন।

পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠায় এবং রিফাত ও নুরনবী নামে দুইজনকে গ্রেফতার করে।

নিহত আশিকুর লালমনিরহাট জেলার শহীদুল ইসলামের ছেলে। তিনি বন্দর উপজেলার চাঁনপুর এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। গুলিবিদ্ধ আহত বাবুল কুমিল্লার বাইতোলা গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মদনপুর পরিবহন স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে গত ১৮ নভেম্বর স্থানীয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান ও আমির হোসেনের বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। ওই মামলায় পুলিশ আসামি গ্রেফতার করতে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পরে এলাকাবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশীদ বাংলানিউজকে জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় পুলিশের ওপর হামলা করে গাড়ি ভাঙচুর ও শর্টগান ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বন্দর থানার এসআই আলী বাদী হয়ে ২৪ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া একজন নিহতের ঘটনায় পৃথক আরেকটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এ ঘটনার তদন্ত চলছে। সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনায় কোনো পুলিশ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এসপি হারুন অর রশীদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৯
আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।