ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

স্কুল শিক্ষককে আটকে অশ্লীল ছবি, কনস্টেবল ক্লোজড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৯
স্কুল শিক্ষককে আটকে অশ্লীল ছবি, কনস্টেবল ক্লোজড

জামালপুর: ডিবি পুলিশ পরিচয়ে রাস্তা থেকে এক শিক্ষককে জোরপূর্বক আটক করে এক নারীর সঙ্গে অশ্লীল ছবি তুলে অর্থ দাবির অভিযোগে পুলিশের দুই কনস্টেবলকে ক্লোজড করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (০৮ জানুয়ারি) রাতের এ ঘটনার পর বুধবার (০৯ জানুয়ারি) ক্লোজড হওয়া দুই কনস্টেবল হলেন- মো. নকিব ও মো. আনোয়ার হোসেন।

ঘটনার শিকার মো. নজির হোসেন জেলার মেলান্দহ উপজেলার চরপলিশা জাহানারা লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শিক্ষক নজির হোসেন অভিযোগ করেন, তিনি ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরের সরদারপাড়া রাস্তা দিয়ে হেঁটে শহরের পশ্চিম নয়াপাড়ায় তার বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দুই ব্যক্তি সরদারপাড়ার রাস্তা থেকে হঠাৎ তাকে আটক করে হাতকড়া পরিয়ে শহরের সরদারপাড়ায় এক বাসায় নিয়ে যায়। ডিবি পরিচয় দেওয়া ওই দু’জনের একজন ওই বাসার ভাড়াটিয়া।

এরপর তারা ওই বাসার একটি কক্ষে তাকে আটক রেখে অপরিচিত এক নারীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে অশ্লীল ছবি তোলে। এরপর তারা ওই ছবি দেখিয়ে শিক্ষক নজির হোসেনের কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। না দিলে তার ক্ষতি হবে বলে ভয়ভীতি দেখান। প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে এ নিয়ে দেন দরবার করেন।

এক পর্যায়ে কৌশলে দুই লাখ টাকা দেওয়ার কথা রাজি হয়ে শিক্ষক নজির হোসেন ওই বাসা থেকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বের হয়েই ফোনে তার স্বজনদের বিষয়টি জানান।

রাতেই শিক্ষক নজির হোসেন মোবাইল ফোনে জামালপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীকে জানান। ঘটনা জানতে পেরে ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী কয়েকজন স্থানীয় নেতাকে নিয়ে রাত দেড়টার দিকে জামালপুর ডিবি কার্যালয়ে যান। ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী ডিবি পুলিশকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন।

পরে ডিবির ওসি মো. ছালেমুজ্জামান ও সদর থানার ওসি মো. নাছিমুল ইসলাম রাতেই কনস্টেবল নকিব ও আনোয়ার হোসেনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হন। তাদের মধ্যে নকিব কিছুদিন আগে ডিবিতে ছিলেন। একটি অপরাধের ঘটনায় মাসখানেক আগে তাকে জামালপুর পুলিশ লাইনসে বদলি করা হয়। তার সহযোগী কনস্টেবল আনোয়ার হোসেন জামালপুর পুলিশ কোর্টে কর্মরত।

রাতেই ভুক্তভোগী শিক্ষক নজির হোসেন ওই দুই পুলিশ কনস্টেবলসহ অজ্ঞাত এক নারীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওই দুই কনস্টেবলকে জামালপুর পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়।

দিনভর বিষয়টি নিয়ে কেউ কিছু না বললেও রাতে জামালপুরের ডিবির ওসি মো. ছালেমুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, যে দু’জন কনস্টেবলকে শনাক্ত করা হয়েছে তারা ডিবির কেউ না। তাদের মধ্যে নকিব পুলিশ লাইনসে এবং আনোয়ার হোসেন জামালপুর কোর্ট পুলিশে কর্মরত।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৯
জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।