ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কামালকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮
কামালকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য ও ড. কামাল

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে পুলিশকে 'জানোয়ার লাঠিয়াল বাহিনী' মন্তব্য করায় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

একইসঙ্গে এই অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্যের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবলে আঘাত হেনে দায়িত্ব পালনে বিঘ্ন সৃষ্টির যে কোনো ধরনের অপতৎপরতা থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলা হয়েছে।

বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ও ডিএমপির তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব বলা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশ পুলিশকে ‘জানোয়ার লাঠিয়াল বাহিনী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, যা বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। এ ধরনের আপত্তিকর, অবিবেচনাপ্রসূত মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের মতো জননিরাপত্তা ও জন-শৃঙ্খলা বিধানে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনকারী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানোর মতো অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধসহ এ বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস মনে করিয়ে বলা হয়, জাতির যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে পুলিশ সদস্যরা প্রাণ বিলিয়ে দিতেও কখনো পিছপা হয়নি। তাই ড. কামাল হোসেনের মতো মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠকের কাছ থেকে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য জাতির মনে ভিন্ন চিন্তার উদ্রেক করে।

বাংলাদেশ পুলিশের দুই লাখ সদস্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দমন ও উদঘাটনে বদ্ধপরিকর মন্তব্য করে বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, পুলিশের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবে বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে রয়েছে। সৃষ্ট নিরাপত্তা বলয়ে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সামিট, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। জঙ্গি কার্যক্রম, সন্ত্রাসবাদ, সংঘবদ্ধ অপরাধ সুচারুরূপে মোকাবিলা করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।

২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেশব্যাপী জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, নাশকতা, অন্তর্ঘাতমূলক অপতৎপরতা প্রতিরোধ করতে দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের ২৭ জন সদস্য আত্মাহুতি দিয়েছেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মূল দায়িত্ব বাংলাদেশ পুলিশের উপর অর্পিত। নির্বাচনের সব কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার সদস্য দেশব্যাপী নিয়োজিত। এমন মুহূর্তে বাংলাদেশ পুলিশকে ‘জানোয়ার লাঠিয়াল বাহিনী’ হিসেবে আখ্যায়িত করা প্রকৃতপক্ষে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অপচেষ্টা মাত্র।

তাই অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্যের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবলে আঘাত হেনে বিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালনে বিঘ্ন সৃষ্টির যে কোনো ধরনের অপতৎপরতা থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সংগঠনটি।

কামালের এমন বক্তব্য পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের দেশের মানুষের পাশাপাশি তাদের পরিবারের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে উল্লেখ করে সর্বোপরি বলা হয়, তার এই বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, আপত্তিকর ও মানহানিকর। আমরা তার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি প্রকাশ্যে পুলিশ বাহিনীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৮
পিএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।