ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নেতিবাচক উপাদানের প্রভাবেই পাটশিল্পে বিপর্যয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৮
নেতিবাচক উপাদানের প্রভাবেই পাটশিল্পে বিপর্যয় সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: পাটশিল্প ধ্বংস হয়নি। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নেতিবাচক উপাদানের প্রভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটশিল্পের বিপর্যয় ঘটেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য প্রয়োজন প্রযুক্তির সহযোগিতা। এছাড়া এই শিল্পের উন্নয়ন সম্ভব নয়।

মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় পাট ও পাটশিল্প রক্ষা কমিটি আয়োজিত ‘পাট খাতের বর্তমান অবস্থা ও করণীয়’ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা একথা বলেন।  

পাট ও পাটশিল্প রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালিদ হোসেন বলেন, এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত যেসব আইন রয়েছে তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

অথচ পাটকে যদি বহুমুখী পণ্যের জায়গায় নিয়ে যেতে পারি তাহলে দেশের ভবিষ্যতই ভালো হবে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো লবিস্ট এবং ভালো মানের পণ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা গেছে। তাই পাট শিল্পের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সিন্ডিকেট এবং দুর্নীতি কঠোরভাবে দমন করতে হবে। কারণ সঠিক সময়ে সঠিক পরিকল্পনা এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনার অভাবেই এই শিল্পটি পিছিয়ে পড়েছে।  অন্যদিকে বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশন (বিজেএমসি)  পাটকলগুলোর শ্রমিকদের মজুরি পাট ও পাটজাত পণ্য বিক্রির টাকা থেকে পরিশোধের কথা বলেছে। কিন্তু এটি একটি অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বলে দাবি করছেন পাট শ্রমিকরা। তাদের মতে, পাটজাত পণ্য বিক্রির সঙ্গে শ্রমিকরা কোনভাবেই জড়িত না।  

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি শহীদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ২১৫টি পাটকল রয়েছে। তার মধ্যে ৫১টি বন্ধ। বর্তমানে দেশে ৬১ টন পাট ব্যবহার করা হয়, রফতানি করা হয় ১৪ টন। কিন্তু তারপরও এই খাতটির এতো খারাপ অবস্থা। পাটশিল্প কিন্তু ধ্বংস হয়নি। তবে এই শিল্পের বৃহত্তম অংশ যেটা সরকারের অধীনে ছিল তার বিপর্যয় ঘটেছে।

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ-এর পরিচালক আসগর আলী সাবরী বলেন, বর্তমানে পাট খাতের সমস্যা দূরীকরণে জুট প্যাকেজিং আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে।  পাটকলগুলোর লোকসান কমাতে কলগুলোর লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো জরুরি। পাশাপাশি দক্ষ বাজারজাত ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, মধ্যসত্বভোগীদের যোগসাজসে নির্ধারিত মৌসুমে কাঁচা পাট কিনতে পারেন না সংশ্লিষ্টরা। পাট মৌসুম শেষে দ্বিগুণ দামে পাট কেনেন তারা। এতে পাটকলগুলো ক্রামগত লোকসান গুণছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, বর্তমানে পাটকলগুলো ৬০-৬৫ হাজার টাকায় কাঁচা পাট কেনে এবং বিক্রি করে ৮৫ হাজার টাকায়। আর এর সঙ্গে উৎপাদন ব্যয় যোগ করলে কোনো লাভই থাকে না।  

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন  অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের ডেপুটি ম্যানেজার রেজোয়ান সিদ্দিকী।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে পাট শিল্পের উন্নয়নে বেশকিছু সুপারিশমালা উত্থাপন করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৮
এমএএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।