ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নগরবাসীর মনের মতো নগর চান জামাল মোস্তফা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৮
নগরবাসীর মনের মতো নগর চান জামাল মোস্তফা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফা | ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: নগরবাসীর মনের মতো নগর গড়তে চান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফা। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

বুধবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম-এর কার্যালয়ে এসে এসব কথা বলেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র।

জামাল মোস্তফা বলেন, নগরবাসীর চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে ঢাকা নগরীকে ঢেলে সাজাতে চাই।

এ নগরীকে বাসযোগ্য করতে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের দায়বদ্ধতা রয়েছে। নগর উন্নয়নের সহায়ক হলো গণমাধ্যম।

নগর উন্নয়নে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম’র কনসালট্যান্ট এডিটর জুয়েল মাজহার বলেন, মানুষের দৈনন্দিন চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়েই সিটি করপোরেশনকে পরিকল্পনা নিতে হবে। একটি নগরী বাসযোগ্য করার অন্যতম দিক হলো- অবকাঠামোগত উন্নয়ন। ঢাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা এখনো আশাব্যঞ্জক উন্নত নয়।

তিনি বলেন, যখন ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয় তখন যেন মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই সেটা করা হয়। অপরিকল্পিত অবকাঠামো তৈরি করলে জনগণ এর সুফল পায় না। নগরের উন্নয়নে শুধু সিটি করপোরেশন নয়, পাশাপাশি নগর কেন্দ্রিক অন্যান্য সরকারি সংস্থারও দায়বদ্ধতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ওয়াসা-রাজউকসহ সবাইকে সমন্বয় সাধন করে কাজ করতে হবে। তাহলে নগর উন্নয়নের সুফল জনগণ পাবে।

আধুনিক ঢাকা গড়ার স্বপ্নের কথা তুলে ধরে ডিএনসিসির ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফা বলেন, জনগণকে আধুনিক সেবা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই আন্তরিক। ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় পরিবর্তনের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন শেখ হাসিনা সেই ধারাবাহিকতায় স্বপ্ন বাস্তবায়নের যোগ্য লোক আনিসুল হককে মেয়র বানিয়েছিলেন। ৬টি কোম্পানির অধীনে গণপরিবহন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কাজ করছে।
নগর উন্নয়ন প্রসঙ্গে আলোচনা করছেন বাংলানিউজের কনসালট্যান্ট এডিটর জুয়েল মাজহার ও ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফা | ছবি: রাজীন চৌধুরীসেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন কতটুকু সম্ভব- এমন প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত মেয়র বলেন, আগামী ২ বছরে ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন হবে। আমি শতভাগ আশাবাদী। আগামী ২ বছরে সেটা পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব।

জামাল মোস্তফা আরো বলেন, বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোতে ১০ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত ময়লা আবর্জনা রয়েছে। তুরাগ নদ বালু কারবারীদের দখলে। নদী-খাল দখলমুক্ত ও বর্জ্য অপসারণ করে ঢাকার চারপাশের নদী হাতিরঝিলের আদলে করার প্রস্তাব ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছি। নদীর দুই পাশে হাঁটার লেন থাকবে। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করলেই সেটা বাস্তবায়ন সম্ভব। আর সেটা বাস্তবায়ন হলে ঢাকা শহরে কোন ধরনের জলাবদ্ধতা থাকবে না। মানুষ মুক্ত বাতাস নিতে পারবে।

এ সময় বাংলানিউজের কনসালট্যান্ট এডিটর জুয়েল মাজহার বলেন, বাংলানিউজ সবসময় সিটি করপোরশেনের ইতিবাচক কাজের প্রশংসা করে। তবে সিটি করপোরেশনের গাফিলতি থাকলে গণমাধ্যমের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই সেটাও জনগণের কাছে তুলে ধরে। কারণ, গণমাধ্যমের কাজ হলো জনগণের কল্যাণে কাজ করা।

জুয়েল মাজহার উন্নত বিশ্বের আদলে ঢাকা শহরের পরিবহনে প্রতিবন্ধীদের ওঠা-নামা-চলাফেরায় বিশেষ ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দিয়ে বলেন, প্রতিবন্ধীরা সংখ্যায় কম হলেও তারা আমাদের সমাজে অবহেলিতই আছে। যদিও উন্নত বিশ্বে প্রতিবন্ধীদের জন্য পরিবহনে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকা শহরে এরকম ব্যবস্থা চালু করা গেলে প্রতিবন্ধীরা উপকৃত হবে।

জবাবে মেয়র জামাল মোস্তফা বলেন, ৬ কোম্পানির অধীনে পরিবহন ব্যবস্থা পরিচালনা করা গেলে প্রতিবন্ধীবান্ধব ব্যবস্থা চালু করা যাবে। গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সেই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঢাকা শহরের চারপাশে বাস টার্মিনালের জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কিছু সরকারি জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। যেসব এলাকায় সরকারি জমি নেই, সেখানে জমি অধিগ্রহণ করে টার্মিনাল করা হবে।
বাংলানিউজের কনসালট্যান্ট এডিটর জুয়েল মাজহার ও অন্যান্যদের হাতে ‘নগরিয়া’র সংখ্যা তুলে দেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফা | ছবি: রাজীন চৌধুরীইতিমধ্যে একটি ডিপিপিও তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে যাত্রী নির্ধারিত স্টপেজে নামিয়ে দিয়ে কোন বাস সড়কে থাকবে না। সোজা নির্ধারিত বাস টার্মিনালে চলে যাবে। ফলে যানজটও কমে আসবে।

ঢাকা শহরের ঐতিহ্যের সাথে মিল রেখে একটি টাওয়ার করার পরিকল্পনা জানিয়ে জামার মোস্তফা বলেন, আমাদের একটা স্বতন্ত্র ঐতিহ্য রয়েছে। সেই ঐতিহ্য তুলে ধরতে ঢাকা গেট ও টাওয়ার তৈরি করা হবে।

কনসালট্যান্ট এডিটর জুয়েল মাজহার বলেন, শহরের ময়লা যখন ড্রেন থেকে তোলা হয়, সেটা যেন একদিনের মধ্যে সরিয়ে ফেলা হয়। সেটা নিশ্চিত করতে পারলে পরিবেশ দূষণ অনেকটাই কমে আসবে। এই ময়লা ঢাকা শহরের পরিবেশ দূষণের বড় একটা মাধ্যম। নগরকে পরিচ্ছন রাখতে জনগণ-নগর কর্তৃপক্ষ সবারই একটা দায়বদ্ধতা আছে।

ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফা বলেন, অবিভক্ত ঢাকা সিটির প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ সিটি গর্ভমেন্ট চালুর স্বপ্ন দেখেছিলেন। যদিও সেটা বাস্তবায়ন করতে পারেন নাই। আমি মনে করি, সিটি করপোরেশন যেহেতু জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলে, তাই সিটি গর্ভমেন্ট চালু হওয়া দরকার। এটা করতে পারলে সিটি সরকারের অধীনে সকল সংস্থা চলে আসবে। তখন আর সমন্বয়হীনতা থাকবে না। নগরের উন্নয়ন করতে হলে সেটা চালু করা দরকার।  

তিনি বলেন, তবে আগের চেয়ে ওয়াসা-রাজউকসহ অন্য সকল সংস্থার সাথে সিটি করপোরেশনের দূরত্ব অনেকটা কমে এসেছে। সকল সংস্থা সিটি করপোরেশনের কথা শুনছে। এটা নগরের উন্নয়নে ইতিবাচক দিক।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলানিউজের আউটপুর এডিটর (ইংলিশ) এস এম সালাউদ্দিন, লাইফস্টাইল এডিটর শারমিনা ইসলাম ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মামুন প্রমুখ। পরে ভারপ্রাপ্ত মেয়র ডিএনসিসি প্রকাশিত ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘নগরিয়া’র সংখ্যা কনসালট্যান্ট এডিটর জুয়েল মাজহারের হাতে তুলে দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৮
টিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।