ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সফল মন্ত্রী বললে লজ্জা পাই: কাদের 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
সফল মন্ত্রী বললে লজ্জা পাই: কাদের  বক্তব্য দিচ্ছেন ওবায়দুল কাদের। ছবি: জিএম মুজিবুর/বাংলানিউজ

ঢাকা: ‘নিজেকে কেউ সফল মন্ত্রী বলে প্রশংসা করলে মনে মনে সত্যিই কষ্ট পাই। আমি বেদনার অঙ্কুরে বিদ্ধ হই, মনে মনে একটু কষ্ট পাই, সঙ্গে লজ্জাও। কারণ এখনো সড়কে মৃত্যুর কাফেলা থামছে না, অনিয়মের কাফেলা থামছে না, বিশৃঙ্খলার কাফেলা থামছে না।’   

সোমবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কেআইবি অডিটোরিয়ামে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০১৮ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
 
তিনি বলেন, আমরা যত কিছুই করি সচেতনতা  বৃদ্ধি করতে না পারলে কোনো কাজে আসবে না।

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে যতটা ইঞ্জিনিয়ারিং সমস্যা এবং এনফোর্সমেন্টের সমস্যা; তার চেয়ে বেশি সচেতনতা। সচেতনতা বাড়ানোর প্রক্রিয়াটাতে আমরা খুব এগোতে পারিনি।

আরও পড়ুন>>
** 
তফসিল ঘোষণার আগে সংলাপের যৌক্তিকতা নেই 

‘আমাদের রাস্তায় যানজট-জলজট-জনজট এই তিনটি যখন মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়, তখন সেই দৃশ্যপটটা অস্বাভাবিক। কাজেই আমাকে যখন কেউ সফল মন্ত্রী বলেন,  আমার প্রশংসা করতে চায় আমি মনে মনে সত্যি বেদনার অঙ্কুরে বিদ্ধ হই, মনে মনে একটু কষ্ট পাই, সঙ্গে লজ্জাও পাই। কারণ আমার চোখের সামনে যখন বিশাল একটা যানজট। যখন দেখি এই শহরে যানজটের মধ্যে আটকে আছে নারী, শিশু মুমূর্ষু রোগী। অনেকের হয়তো রাস্তাতেই জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে হয়, লম্বা যানজটের  কারণে। এসব কবে বন্ধ করতে পারব?’
 
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, দেখা যায় সামান্য একটা গাড়ি অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে, সেখানে চালকের দোষ নাকি পথচারীর দোষ সেটা পরে দেখা গেলো, কিন্তু হাজার হাজার গাড়ি লম্বা যানজটের সারি। পথে পথে মানুষের কি যে অবর্ণনীয় কষ্ট।  

‘সড়কে এখনো মৃত্যুর কাফেলা থামছে না, অনিয়মের কাফেলা থামছে না, এখনো বিশৃঙ্খলার কাফেলা থামছে না। এখনো অনিয়মের কাফেলা চলমান। এখানে আমাদের দগদগে ব্যর্থতা। আমি মন্ত্রী, আমি এর দায় এড়াতে পারি না। পুরোপুরি সাফল্যের কৃতিত্বের দাবিদারও আমি নই। আমাদের এতো কিছু করার পরও অনেক দূর পথ পাড়ি দিতে হবে। ’
 
ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়কে-মহাসড়কে থ্রি হুইলার এখনও চলছে। আমরা কন্ট্রোল করতে পারিনি। আমরা ২২টি সড়কে এসব বন্ধের ঘোষণা করার পরও কন্ট্রোল করতে পারিনি।  

মঞ্চে উপস্থিত নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের প্রতি উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি আমরা সচেতন না হলে দেশ সচেতন হবে না। দেশকে বদলাতে হলে, সড়ক পরিবহনের যে বিশৃঙ্খলার ছবি সেটা পরিবর্তন করতে হলে বা বদলাতে হলে আমাদের বদলাতে হবে আগে। আমরা না বদলালে দেশ বদলাবে না। আমরা নিজেরা আইন করি আমরাই আইন ভঙ্গ করি।
 
মোটরসাইকেল সড়কে নতুন আতঙ্ক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সবার প্রচেষ্টায় একটা চিত্র পাল্টে গেছে। আগে যেখানে একজনও হেলমেট পড়ত না এখন সেখানে মোটরসাইকেলের দু’জনই হেলমেট পড়ছে। আমার মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রত্যেককে একটা করে গোলাপ দিয়ে শুভেচ্ছা জানাই।
 
সড়ক দুর্ঘটনার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, দুর্ঘটনার জন্য বাস-ট্রাকের চালক যতটা না দায়ী তার  চেয়ে বেশি দায়ী মোটারসাইকেল। এই মোটরসাইকেলের কারণেই দুর্ঘটনা বাড়ছে।  

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সভাপতি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম।  
 
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদী স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. একাব্বর হোসেন, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ইকরামুল হাসান, নিরাপদ সড়ক চাই এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
এসএম/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad