ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাদেশেই চিরশায়িত হচ্ছেন ফাদার রিগন 

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৮
বাংলাদেশেই চিরশায়িত হচ্ছেন ফাদার রিগন 

ঢাকা: ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’প্রাপ্ত ও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব অর্জনকারী ইতালির খ্রিস্ট ধর্মযাজক ফাদার মারিনো রিগনের মরদেহ আগামীকাল রোববার (২১ অক্টোবর) ঢাকায় আনা হচ্ছে। তার শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী, ফাদার রিগনকে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার শেলাবুনিয়া চার্চের পাশেই চিরশায়িত করা হবে।

শনিবার (২০ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃপ্রচার অনুবিভাগ থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় অবদান রাখার পাশাপাশি এদেশের মানুষের কল্যাণে নিবেদিত এই মহান ব্যক্তি ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর ইতালিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

বাংলাদেশ সরকার ফাদার রিগনের শেষ ইচ্ছের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তার দেহাবশেষ বাংলাদেশের মাটিতে তারই স্থাপিত শেলাবুনিয়া চার্চের পাশে সমাহিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।

মারিনো রিগন ১৯২৫ সালের ৫ ফ্রেব্রুয়ারি ইতালির ভেনিসের অদূরে ভিন্নাভেরলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিস্ট ধর্মযাজক হিসেবে তিনি ১৯৫৩ সালে বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে শেষে তিনি মোংলার শেলাবুনিয়া গ্রামে একটি চার্চ ও একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং ওই গ্রামেই তার স্থায়ী আবাস গড়ে তোলেন।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি ছিল তার অকুণ্ঠ সমর্থন। যুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দিতে নিজের প্রতিষ্ঠিত চার্চে গোপনে একটি চিকিৎসা ক্যাম্প স্থাপন করেছিলেন তিনি। তার এই ক্যাম্পে চিকিৎসাসেবা নিয়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধা সুস্থ হয়ে পুনরায় রণাঙ্গনে ফিরে গেছেন। তাদের মধ্যে বিখ্যাত হেমায়েত বাহিনীর প্রধান হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রমও ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে ফাদার মারিনো রিগনের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০০৯ সালে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেয়। এরপর ২০১২ সালে দেয় ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’।

বাংলাদেশে বসবাসের পর থেকে তিনি বাংলা ভাষা শিখতে শুরু করেন এবং বাংলা সাহিত্যের প্রতি তার কৌতূহল ও নিবিড় ভালবাসার জন্ম হয়। তিনি রবীন্দ্রনাথের রচনাবলি, লালনের সংগীত ও দর্শনের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হন। তার মাধ্যমে ইতালিয়ান ভাষায় অনূদিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গীতাঞ্জলী’সহ প্রায় ৪০টি কাব্য, জসীমউদ্দীনের ‘নক্সী কাঁথার মাঠ’ ও অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ, লালনের গানসহ অসংখ্য সাহিত্যকর্ম।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৮
টিআর/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।