ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আপদকালীন সার মজুদে হচ্ছে আরও ৩৪ গুদাম

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৮
আপদকালীন সার মজুদে হচ্ছে আরও ৩৪ গুদাম আপদকালীন সার মজুদে হচ্ছে আরও ৩৪ গুদাম (সংগৃহীত ছবি)

ঢাকা: ইউরিয়া সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার জন্য দেশজুড়ে আরও ৩৪টি বাফার সার গুদাম নির্মাণ করবে সরকার। এসব গুদামে ৮ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার মজুদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্মিত হলে গুদামের ভাড়া ও সার রি-ব্যাগিং বাবদ খরচ মিলিয়ে বছরে অতিরিক্ত প্রায় ৬০০ কোটি টাকা সাশ্রয়ের আশা করছে সরকার।

এ লক্ষ্যে ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। ২ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি)।

প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। গুদামগুলোর অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে ৫০ বছর।

আগে থেকেই দেশের ১৩ জেলা- নীলফামারী, সুনামগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পঞ্চগড়, শেরপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, পাবনা, যশোর, বরিশাল, রাজবাড়ী এবং গাইবান্ধায় বাফার গুদাম নির্মাণ চলছে। নতুন প্রকল্পের আওতায় গুদাম নির্মিত হবে- সিরাজগঞ্জের সদর, কাজীপুর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, নড়াইল, মাগুরা, খুলনা, সাতক্ষীরা, বগুড়া, নওগাঁ, গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, জয়পুরহাট, রাজশাহী, নাটোর, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, মানিকগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে।

কর্মকর্তাদের ভাষ্যে, রাজশাহীর বাঘাবাড়ী ও যশোর নওয়াপাড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৯ লাখ মেট্রিক টন সার খোলা আকাশের নিচে থাকে। ফলে জমিতে এসব সারের কার্যকারিতা কম থাকে। খোলা জায়গায় রাখার কারণে ইউরিয়া সার জমাট বেঁধে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। আর্দ্রতার কারণে সারের গুণগত মানও ঠিক থাকে না। ফলে প্রকৃত সুফল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন কৃষকেরা।

সেজন্য সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে মজুদ নিশ্চিত করার জন্য এই বাফার গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে।
 
এ বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মু. আনোয়ারুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, কৃষিখাতে কৃষকের চাহিদার শীর্ষে ইউরিয়া সার। কিন্তু চাহিদার তুলনায় এই সার সংরক্ষণ ও বিতরণে আমাদের তেমন কোনো ভালো ব্যবস্থা নেই। সেজন্য নতুন করে ৩৪টি সার গুদাম নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
 
মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, বর্তমানে বিসিআইসির ২৫টি বাফার গুদাম আছে। এগুলোতে ৩ লাখ মেট্রিক টন সার মজুদ রাখা যায়। ১৩টি গোডাউন নির্মাণাধীন, এসবের মধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার মজুদ রাখা যাবে। তারপরও মজুদ ব্যবস্থা পর্যাপ্ত মনে হচ্ছে না বিধায় মন্ত্রণালয় নতুন করে ৩৪টি গুদাম নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।

বিসিআইসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (রসায়ন) কাজী আশরাফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে দেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা বছরে ২৫ লাখ মেট্রিক টন। খাদ্য উৎপাদনের নিশ্চয়তার স্বার্থে বছরে বিভিন্ন দেশ থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার সার আমদানি করা হয়। ৩৪টি সার গুদাম নির্মিত হলে পিক সিজনের পরিবর্তে অফ পিক সিজনে এসব সার আমদানি করা হবে, তাতে নানা দিক বিবেচনায় ৬০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে সরকারের।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৮
এমআইএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।