ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হতোদ্যম নই, অপারেশন বেগবান করব: র‌্যাব ডিজি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৮
হতোদ্যম নই, অপারেশন বেগবান করব: র‌্যাব ডিজি সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত র‌্যাব সদস্যদের দেখতে যান র‌্যাব ডিজি

ঢাকা: চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনকালে চার সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহতের ঘটনায় র‌্যাব মোটেই হতোদ্যম নয়, বরং মাদকবিরোধী অভিযানকে আরো বেগবান ও শক্তিশালী করার কথা জানিয়েছেন র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।

শুক্রবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত র‌্যাব সদস্যদের দেখতে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।  

আহত চার সদস্যের মধ্যে তিনজনকে হেলিকপ্টারযোগে চট্টগ্রাম সিএমএইচ থেকে ঢাকার সিএমএইচ হাসাপাতালে আনা হয়।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, গত ৫ মাসের মাদকবিরোধী অভিযানে আমরা প্রায় সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকার ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক জব্দ করেছি। ১৭ হাজার মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। এর ফলে বাংলাদেশে মাদকের প্রকোপ অনেকটাই কমে গেছে। প্রকাশ্যে মাদক কেনা-বেচার যে অভিযোগ ছিল এখন আর নেই। কক্সবাজার কেন্দ্রিক মাদক ব্যবসায়ীদের শক্তভাবে দমন করার প্রেক্ষিতে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের রুট ও কৌশল পরিবর্তন করেছে।

যারা মাদক সেবন করতেন তাদের অনেকেই মাদক ছেড়ে দিয়েছেন। মাদক এখন অনেকটাই দুষ্প্রাপ্য, ১০০ টাকার মাদক ৬-৭শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জনগণের সহায়তায় যে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে তার সুস্পষ্ট প্রভাব ইতোমধ্যে জনগণ উপলব্ধি করতে শুরু করেছে। তাই আমরা এটাকে অব্যাহত রাখব, যতদিন প্রয়োজন মনে করি, যোগ করেন বেনজীর আহমেদ।

গুলিবিদ্ধ হয়ে র‌্যাবের ৪ সদস্যের আহতের ঘটনায় মোটেই হতোদ্যম নই  উল্লেখ করে র‌্যাব ডিজি বলেন, বরং এ অপারেশনকে আরো বেগবান ও শক্তিশালী করব। মাদক ব্যবসায়ীদের নিশ্চিহ্ন করার প্রচেষ্টা আরো সুদৃঢ় করার চেষ্টা করব।

ঘটনার বর্ণনায় র‌্যাব প্রধান বলেন, গতকাল (১১ অক্টোবর) গভীর রাতে চট্টগ্রামের বিবির বাজার রেলগেইট এলাকায় আমাদের একটা টিম চেকপোস্ট করে তল্লাশি করছিল। টিমের সদস্যরা দায়িত্ব পালনকালে দেখেন একটি নীল রঙের গাড়ি দ্রুত গতিতে সামনে এগিয়ে আসছে। তখন র‌্যাব সদস্যরা গাড়িটিকে থামানোর সিগনাল দিলে গাড়ি থামিয়ে এক ভদ্রলোক গাড়ি থেকে বের হয়ে এলোপাথাড়ি গুলি শুরু করেন। প্রথমেই আমাদের ২ জন অফিসার গুলিবিদ্ধ হন। তখন সঙ্গে থাকা অন্য সদস্যরা পাল্টা গুলি চালালে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। ওই ব্যক্তি মাটিতে পড়ে গিয়েও আরো তিন রাউন্ড গুলি ছোড়েন। তখন আমাদের দুজন সৈনিক গুলিবিদ্ধ হন।

বেনজীর আহমেদ বলেন, পরে ওই গাড়িটি তল্লাশি করে ১২ হাজার ইয়াবা, ১টি বিদেশি পিস্তল, ৪টি ফোন ও ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়। আমরা ধারণা করছি গাড়িতে আরো প্যাসেঞ্জার ছিল, যারা বন্দুকযুদ্ধের সময় পালিয়ে গেছেন। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে।

তিনি আরো বলেন, আহতদের মধ্যে আমাদের একজন অফিসার আদনান পেটে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তার অবস্থা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। চট্টগ্রাম সিএমএইচে তার ছয় ঘণ্টার অপারেশন হয়েছে। বাকি তিনজনকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। ১ জন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকায় তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, প্রয়োজন মনে করলে আগামীকাল তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হবে।

গত ৫ মাস ধরে র‌্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে র‌্যাব সদস্যদের এটাই সবচেয়ে বড় ‘ক্যাজুয়ালটি’ উল্লেখ করে র‌্যাব প্রধান বলেন, দেশকে মাদকমুক্ত করার প্রত্যয়ে আমাদের অফিসার এবং জওয়ানরা যে পরিশ্রম করছেন, এ প্রথম মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাজুয়ালটির মুখোমুখি হলাম। তবে এ ঘটনায় আমরা মোটেই হতোদ্যম নই, আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাব।

বাংলাদেশ সময়: ২২১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৮
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।