ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সিলেট বিভাগের সর্ববৃহৎ ‘শিব বিগ্রহ ও শতনয়না দেবী’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৮
সিলেট বিভাগের সর্ববৃহৎ ‘শিব বিগ্রহ ও শতনয়না দেবী’ ‘শিব বিগ্রহ ও শতনয়না দেবী’

মৌলভীবাজার: আর মাত্র চারদিন বাকি। স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আগমন ঘটবে দেবী দুর্গার। আগামী সোমবার (১৫ অক্টোবর) ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজা।

দেবী দুর্গার আগমন উপলক্ষে ব্যতিক্রমী আয়োজনে বরাবরের মতো এগিয়ে মৌলভীবাজারের ত্রিনয়ণী শিববাড়ি। এবার তাদের আয়োজনে থাকছে সিলেট বিভাগের সর্ববৃহৎ শিব বিগ্রহ ও দেবী ভাগবতের কাহিনী অবলম্বনে নীলবর্ণা শত নয়না দেবী দুর্গার প্রতিমা।

আরো থাকছে অসুর বধ এবং দশভুজা দেবীর পূজার্চনা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মৌলভীবাজার পৌর এলাকার ফরেস্ট অফিস রোডের সৈয়ারপুরে বিশালাকার মাঠ জুড়ে এই মণ্ডপ সাজানোর কাজ চলছে। মূল দেবীকে প্রাচীর বন্দি করা হলেও ফটকের সামনে তৈরি করা হচ্ছে ৩০ ফুট উচ্চ শিব বিগ্রহ। শিবের প্রতিচিহ্ন হিসেবে সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে বিশালাকৃতির শিবলিঙ্গ। সঙ্গে রয়েছে তার বাহন সাপ। ফটক পার হয়ে সাজানো প্রাচীরের ভেতরে দেখা মিলবে ২৪ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন দুর্গা দেবীর মূর্তি। যেটাকে মূলত নীলবর্ণা শতনয়না দেবীর রূপ দেওয়া হচ্ছে। যার শরীরে থাকবে একশত চোখ।

হাতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি থাকায় কথা বলার সময় নেই বৃহৎ এই শিল্প কাজের প্রধান কারিগর প্রসেঞ্জিত পাল টাংকুর। নিরলসভাবে প্রায় আড়াই মাস ধরে প্রতিমা নির্মাণের কাজ করছেন তিনি। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, একান্ত ব্যক্তিগত চিন্তা থেকে এই ডিজাইন করা হয়েছে। এই প্রতিমা সম্পূর্ণ নীল রঙের হবে। বাংলাদেশে কেউ কোথাও এরকম করছে কি না তা আমার জানা নেই।

ত্রিনয়ণী শিববাড়ি পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সদস্য দিপু কর্মকার বাংলানিউজকে বলেন, গত ১১ বছর ধরে আমরা ব্যতিক্রমী পূজার আয়োজন করে থাকি। এবার হচ্ছে বৃহৎ শিব বিগ্রহ ও দেবীভগবতের কাহিনী অবলম্বনে নীলবর্ণা শত নয়না দুর্গা দেবী প্রতিমা। গত বছর আমাদের আকর্ষণ ছিলো এক হাজার হাতের দেবী। যা দেখতে প্রতি ঘণ্টায় দুই লাখ মানুষের ভিড় হয়েছিলো। এবারো তার ব্যতিক্রম হবে না।

পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ৮৪টি সার্বজনীন ও ২২টি ব্যক্তিগত মণ্ডপে পূজা উদযাপন করা হবে। শ্রীমঙ্গলে সার্বজনীন ১৫৪টি ও ব্যক্তিগত ১৩টি, কমলগঞ্জে সার্বজনীন ১৩৬টি ও ব্যক্তিগত ২০টি, রাজনগরে ৭৬টি সার্বজনীন ও ৫৪টি ব্যক্তিগত, কুলাউড়ায় ১৯৪টি সার্বজনীন ও ২৩টি ব্যক্তিগত, জুড়িতে ৫৬টি সার্বজনীন ও তিনটি ব্যক্তিগত এবং বড়লেখা উপজেলায় ১৩৩টি সার্বজনীন ও ১৮টি ব্যক্তিগত মণ্ডপে পূজা উদযাপন করা হবে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ রায় মুন্না বাংলানিউজকে বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর বিভিন্ন ধরনের ব্যতিক্রমী মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে। প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। আমরা প্রশাসন থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছি।  

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল বাংলানিউজকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েকস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকের ডিবি পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখবে। এছাড়া শহরের পূজা মণ্ডপগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা রয়েছে। যা সরাসরি মনিটরিং করার জন্য নির্ধারিত সেল থাকবে। আশা করি মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।