ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নৌপথে কার্গো পরিবহনে সাশ্রয় হবে ৭৫০ কোটি টাকা 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৮
নৌপথে কার্গো পরিবহনে সাশ্রয় হবে ৭৫০ কোটি টাকা  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: নদ-নদীর ড্রেজিংয়ের গুরুত্বের কথা তুলে দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ড্রেজিং বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অপরিহার্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, সড়কের পরিবর্তে নৌপথে কার্গো পরিবহনে প্রতিবছর ব্যয় সাশ্রয় হয় প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা। পক্ষান্তরে নদীর নাব্যতা রক্ষা ও নিরাপদ নদীপথ উন্নয়নে প্রতিবছর ড্রেজিং বাবদ ব্যয় হয় ৬০ কোটি টাকা। 

মঙ্গলবার (০৯ অক্টোবর) রাজধানীর এয়ারপোর্ট সড়কে হোটেল লা মেরিডিয়ানে ‘দ্বিতীয় দক্ষিণ এশিয়া মেরিটাইম অ্যান্ড লজিস্টিক ফোরাম ২০১৮-’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।  

শেখ হাসিনা বলেন, নদী ও নৌযান উন্নয়নে এবং মানুষ ও পণ্য পরিবহনে নদীর নাব্যতা রক্ষা, নদীর মাধ্যমে জলাধার সৃষ্টি ও নিরাপদ নদীপথ উন্নয়নে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

নাব্যতা রক্ষার জন্য নদীগুলোতে ড্রেজিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের ন্যাশনাল ইন্টিগ্রেটেড মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট পলিসিতেও অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন ব্যবস্থার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।  

অতীতে পণ্য পরিবহনের গৌরবের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেল ও সড়কপথের উন্নয়নের আগে নৌপথই ছিল বাংলাদেশের পরিবহনের প্রধান বাহন। কারণ এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বাংলাদেশের উপর দিয়ে প্রায় ৭০০ নদ-নদী প্রবাহিত হয়েছে।  

‘আমাদের রয়েছে পদ্মা, যমুনা, মেঘনার মতো সুবিশাল নদী এবং এর অসংখ্য শাখা-প্রশাখা। প্রাকৃতিকভাবে বাংলাদেশের নদী, জলাশয়গুলো একে-অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। বর্ষাকালে এগুলো দুকূল ভাসিয়ে একাকার হয়ে যায়। ’

তিনি বলেন, নাব্যতা সঙ্কটের কারণে জলপথের গৌরব কিছুটা ম্লান হলেও এখনও তা আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বৈদেশিক বাণিজ্যের সিংহভাগই সমুদ্রপথে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এছাড়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ যাত্রী ও পণ্য পরিবহন এখনও জলপথের উপরই অনেকটা নির্ভরশীল। বিপুল সংখ্যক মানুষ এই খাতের সঙ্গে জড়িত।

‘অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন ব্যবস্থাকে যৌক্তিক ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবহন মাধ্যম হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি। এজন্য আমরা বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌরুটগুলো চালু করা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ’ 

এ সময় বাংলাদেশের নৌযান নির্মাণে দক্ষতার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।  

তিনি বলেন, সুদূর প্রাচীনকালে এ দেশে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ইদানীং জাহাজশিল্প নতুনরূপে আশার আলো দেখাতে শুরু করেছে। বাংলাদেশে নির্মিত পণ্য ও যাত্রীবাহী জাহাজ এখন ডেনমার্ক, জার্মানি পোল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

পরিসংখ্যানের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌপথে ২০১০-১১ অর্থবছরে মোট আমদানি-রপ্তানি ছিল ৪৩.১৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন। যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ৭৩.২১ মিলিয়ন মেট্রিক টন। বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদারদের সহযোগিতায় আমরা জলপথের দীর্ঘমেয়াদী নাব্যতা বৃদ্ধি, নদীবন্দরগুলোর আধুনিকায়ন, নতুন বন্দর নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপোগুলোতে জাহাজ ও যাত্রী ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং সকল নৌযানের দক্ষতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করবো।  

‘এসব বিবেচনায় নিয়ে, আমরা নেদারল্যান্ডস সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রস্তুত করেছি এবং ইতোমধ্যে এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনার অন্যতম উপাদান হচ্ছে পানি সম্পদের সুষ্ঠু ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৮
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।