ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফেরি তলিয়েছে, ভাটপাড়ার বাসিন্দাদের দুঃখ ঘোচাবে কে?

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৮
ফেরি তলিয়েছে, ভাটপাড়ার বাসিন্দাদের দুঃখ ঘোচাবে কে? ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হতে হয় ভাটপাড়ার আশপাশের লোকজনকে। ছবি: জিএম মুজিবুর

অভয়নগর (যশোর) থেকে ফিরে: যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে ভৈরব নদ। নদীর ভাটপাড়া ঘাটের এপারে-ওপারে মিলিয়ে প্রায় ৩০-৩৫টি গ্রামের মানুষের বসবাস। স্বাধীনতার আগে এই নদী পার হওয়ার একমাত্র মাধ্যম ছিল ছোটখাট নৌকা।

ঝুঁকি নিয়ে এভাবে চলাচল বন্ধ হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। সেসময় সরকারের উদ্যোগে ভাটপাড়া বাজারের সঙ্গেই তৈরি হয় একটি ফেরিঘাট।

চলাচল শুরু হয় একটি ফেরির মাধ্যমে। শত বছরের দুর্ভোগ লাঘব হয় ভৈরব-পাড়ের জনপদের মানুষের।

কিন্তু সেই সুদিন বেশিদিন থাকলো না। ফেরি ঠিকমতো মেরামত ও পরিচর্যা না করায় সেটি নষ্ট হয়ে যায়। এক যুগ পার হতে না হতেই বন্ধ হয়ে যায় ওই ফেরির চলাচল। অবহেলা-বেখেয়ালে ফেরিটির বেশিরভাগ অংশই তলিয়ে গেছে নদীতে। আর তাই দেশের অন্য অঞ্চলে একের পর এক ব্রিজ হয়ে জীবনযাত্রার মানে দারুণ গতি এলেও পেছনে রয়ে গেছে ভাটপাড়ার আশপাশের মানুষের জীবনযাত্রা।  

এখন এই নদের এপার থেকে ওপারে যেতে শিশু-নারীসহ হাজারো বাসিন্দাকে চড়তে হয় ছোটখাটো নৌকায়। ঝুঁকি নিয়ে এই পারাপারে মাঝেমধ্যেই নৌকাডুবির ঘটনাও ঘটে। ফেরি চলাচল চালু হয়েও বন্ধ হয়ে যাওয়ার দুঃখে আক্ষেপ ঝরে ভাটপাড়ার বাসিন্দাদের কণ্ঠে।

অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মোহাম্মদ আকবর মোল্লা বাংলানিউজকে বলছিলেন, ‘আমাদের জন্মের পর থেকে এই নদী পারাপার হয়ে আসছি নৌকাযোগে। কিন্তু ফেরি আসার পর থেকে আমাদের দুই পাশের লোকের অনেক উপকার হচ্ছিল, যেমন এই ভাটপাড়া বাজারে প্রতি সপ্তাহে দুই দিন হাট বসে, পারাপার ব্যবস্থা তখন ভালো থাকার কারণে বাজারের ও এলাকার অনেক উন্নয়ন হয়েছিল। ’অবহেলা-বেখেয়ালে ফেরির বেশিরভাগ অংশই তলিয়ে গেছে নদীতে।  ছবি: বাংলানিউজতিনি বলেন, ‘ভাটপাড়া পাইকপাড়া সিঙ্গারি পোতপাড়া- আশপাশের এলাকাগুলোতে অনেক লোক আছেন যারা খুলনায় চাকরি করেন। এখানে ফেরি থাকতে অনেকে নিজস্ব গাড়ি করে খুলনায় অফিস করে আবার বিকেলে নিজের গাড়ি চালিয়ে বাড়িতে চলে আসতেন। এই ফেরি বন্ধ হওয়ার কারণে তাদের এখন গাড়ি নিয়ে বাড়ি যেতে হলে যশোর ঘুরে নড়াইল হয়ে বাড়িতে আসতে হয়। সেজন্য অনেকেই এখন গ্রাম ছেড়ে শহরকেন্দ্রিক বসবাস করছেন। ’

আকবর মোল্লা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘যদি আবার এই ফেরি মেরামত করা যায়, তবে আশপাশের এলাকার হাজার হাজার মানুষের উপকার হবে। নতুবা ফেরির যেটুক অংশ দৃশ্যমান, সেটিও তলিয়ে যাবে ভৈরব নদের গর্ভে। ’

১৯৯৬ সালে ফেরিঘাট নির্মাণ ও চালু হয়েছিল পার্শ্ববর্তী খুলনা-৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সার্বিক সহযোগিতায়।  

এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘অনেক দিন ভালো চলছিল ফেরিটি। তারপর ইজারাদারের মাধ্যমে চলতে চলতে পরিচর্যার অভাবে ফেরিটি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি খুব তাড়াতাড়ি আবার ফেরিটার পুনঃসংস্কার করতে। যেন দুই পারের লোকজনের যাতায়াতের সুবিধা হয়, সে ব্যবস্থা করার জন্য আমি খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেবো। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৮
জিএমএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।