ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফেরি চলাচল বন্ধ, শিগগিরই নিরসন হচ্ছে না এ সংকট

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৮
ফেরি চলাচল বন্ধ, শিগগিরই নিরসন হচ্ছে না এ সংকট ফাইল ছবি

মাদারীপুর: নাব্যতা সংকটের কারণে কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে বন্ধ রয়েছে সব ফেরি চলাচল। 

এর আগে, এদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাত্র দু’টি ছোট ফেরি চলাচল করেছে বলে বিআইডব্লিউটিসি’র কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্র জানায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটের মূল পদ্মা ও কাঁঠালবাড়ী ঘাটের সংযোগস্থলে পানি কমে যাওয়ায় নাব্যতা সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

গত একমাসেও খননকাজ চালিয়ে ফেরি চলাচলের উপযোগী করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। ফলে ফেরি চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হওয়ায় দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে এ নৌরুটে।

বিআইডব্লিউটিসি’র কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্র জানায়, নৌরুটের লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে পানি কম থাকায় ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে ফেরির তলদেশ। গত এক মাস ধরে রোরো ও ডাম্প ফেরি চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে কে-টাইপ ৫ থেকে সাতটি ফেরি চলাচল করলেও দিন দিন নাব্যতা সংকট বাড়তে থাকায় কমে আসছে ফেরি চলাচলের সংখ্যা। গত এক সপ্তাহ ধরে দিনে ছোট দুই/তিনটি ফেরি চলাচল করলেও রাতে সম্পূর্ণ বন্ধ থাকছে ফেরি চলাচল। এ নৌরুটে রোরো ও ডাম্প ফেরিসহ ১৯টি ফেরি চলাচল করতো।  

ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় এ রুট ব্যবহারকারীদের বেড়েছে দুর্ভোগ। বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে হচ্ছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট। তবে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে আরও বেশি। সন্ধ্যার পরে লঞ্চ ও স্পিডবোট স্বাভাবিক নিয়মেই বন্ধ থাকে। এ সময়টায় যাত্রীরা ফেরিতে করে পদ্মা পার হতো। গত এক মাস ধরে রাতে ফেরি বন্ধ থাকায় বিপাকে সব যাত্রীরা। বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে সন্ধ্যার পর পারাপার হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ফেরি ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, একটি মাত্র ঘাট চালু রয়েছে। যেখানে ছোট দু’টি ফেরি চলাচল করছে। এছাড়া অন্য দু’টি ঘাটে নোঙর করে রাখা হয়েছে ফেরিগুলো। ঘাট এলাকায় যানবাহনের সংখ্যাও কম। টার্মিনালে কিছু ট্রাক থাকলেও ফেরি ঘাট এলাকা যানবাহন শূন্য বলা চলে। স্বাভাবিক সময়ের মতো ব্যস্ততা নেই কোনো।

ঢাকাগামী এক প্রাইভেটকার চালক বাংলানিউজকে বলেন, ইতোপূর্বে এতোটা সংকট হয়নি ফেরি চলাচলে। এখন মনে হচ্ছে দ্রুতই পদ্মাসেতু হওয়ার প্রয়োজন। ফেরি চলে তো চলে না এমন অবস্থা থাকলে মানুষের কাজের বিরাট ক্ষতি হচ্ছে। দু’টি ফেরি চলছে। এখন ঘাটে একটিও নেই। কখন আসবে আর কখন পদ্মা পার হতে পারবো জানা নেই। এ এক সীমাহীন দুর্ভোগ। ’

টার্মিনালে আটকে থাকা ট্রাকচালকরা জানান, বেশির ভাগ ট্রাকই ফিরে যাচ্ছে এ ঘাট থেকে। তারা পাটুরিয়া হয়ে ঢাকা যাবে। এখন আর দক্ষিণাঞ্চলের ট্রাক আসে না এ রুটে। যাদের ট্রাকে পচনশীল পণ্য নেই তারাই এ ঘাটে এখনও আছে পদ্মা পারের অপেক্ষায়।

বিআইডব্লিউটিএ’র মেরিন কর্মকর্তা আহম্মদ আলী বলেন, ফেরি বন্ধ রয়েছে। দিনে মাত্র দু’টি ছোট ফেরি কোনো মতে চলেছে। বিকেল থেকে বন্ধ। লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে মূল পদ্মা ও কাঁঠালবাড়ী ঘাটের চ্যানেলমুখে খননকাজ চালিয়ে যাচ্ছে চায়না ড্রেজার ও বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার দ্বারা। তবে এ সংকট সমাধান হতে কমপক্ষে আরও ১০ থেকে ১২ দিনের মতো লেগে যাবে।

তিনি আরও জানান, পদ্মায় দ্রুত পানি কমছে। গত সাতদিনে ওই সংযোগস্থলে পাঁচ ফুট পানি কমেছে। যা অন্য বছরগুলোতে হয়নি। আর এ কারণেই সময় লাগছে নাব্যতা সংকট নিরসনে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৮
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।