ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীকে চাকমা সার্কেল চিফের চিঠি 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১৮
প্রধানমন্ত্রীকে চাকমা সার্কেল চিফের চিঠি 

রাঙামাটি: পার্বত্যাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত স্বল্প জনসংখ্যার জাতিসত্ত্বার জন্য সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত আসন বহাল রাখার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশিষ রায়। 

মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) বিকেলে চাকমা চিফের একান্ত সচিব  প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠির মাধ্যমে জানা যায়, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি এবং স্থায়িত্বশীল লক্ষ্যমাত্রার যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং স্বল্প জনসংখ্যার জাতিসত্ত্বাসমূহের কাঙ্খিত আর্থ-সামাজিক উন্নতি সাধিত হয়েছে মর্মে যথাযথ সমীক্ষা-লব্ধ তথ্য, নির্দেশক ও সূচক প্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের স্বল্প সংখ্যার জাতিসত্ত্বার নাগরিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সব সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত আসন অব্যাহত রাখা ও পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর করার যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানান চাকমা রাজা।

চিঠিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য সুবিধা-বঞ্চিত বা “অনগ্রসর” স্বল্প সংখ্যার জাতিসত্ত্বাসমূহের আর্থ-সামাজিক মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত সাংবিধানিক ও অন্যান্য নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কার্যক্রমের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।  

চিঠিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভারত-প্রত্যাগত পাহাড়ি শরণার্থীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং অভ্যন্তরীণ পাহাড়ি উদ্বাস্তুদের সিংহভাগ এখনও তাদের নিজস্ব ভিটামাটিতে অ-পুনর্বাসিত রয়েছে। ওই অঞ্চলের ভূমি বিরোধের নিষ্পত্তি এখনও হয়নি।  

পাহাড়ি অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে প্রত্যন্ত উপজেলাগুলোতে যথা: বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, দীঘিনালা, লক্ষ্মীছড়ি, থানচি, রুমা, ইত্যাদি) এবং রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকাতে যথা: কাসালং, রেংখ্যং, সাংগু ও মাতামুহুরি রিজার্ভে), ভূমির অধিকারের অস্বীকৃতি, প্রত্যন্ততা এবং উন্নয়ন অবহেলার কারণে  পুষ্টিহীনতা, মাতৃ মৃত্যু ও শিশু মৃত্যু, নিরক্ষরতা, বেকারত্ব ইত্যাদি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে বলে উল্লেখ করেন।

চিঠিতে তিনি জানান, স্বল্প সংখ্যার জাতিসত্ত্বার মর্যাদা “অনগ্রসর”নয়। এছাড়া আদম-শুমারির তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে ত্রুটিপূর্ণ ও ভিত্তিহীন এবং ফলশ্রুতিতে, বৈষম্যমূলক বলে জানান।  

সমতল অঞ্চলের রাজশাহী বিভাগ, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল, সিলেট বিভাগ, সুন্দরবন অঞ্চল, বৃহত্তর পটুয়াখালী-বরগুনা অঞ্চল, বৃহত্তর কক্সবাজার-চট্টগ্রাম অঞ্চল প্রভৃতি এলাকার রিজার্ভ ফরেস্ট, চা-বাগান, জাতীয় উদ্যান, ইকো পার্ক, অভয়ারণ্য ও অন্যান্য এলাকার স্বল্প জনসংখ্যার জাতিসত্ত্বার সদস্যদের ভূমি হরণের সমস্যাও অনুরূপভাবে এখনও চলমান রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।  

এমতাবস্থায়, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িসহ দেশের অন্যত্রের স্বল্পসংখ্যার জাতিসত্ত্বাদের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে প্রণীত বৈষম্যহীন জননীতি অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে তার সুযোগ্য তনয়া হিসেবে আমরা আপনার কাছে ন্যায্য, বৈষম্যহীন, বলিষ্ঠ ও অন্যান্যভাবে যথাযথ পদক্ষেপ আশা করি।  

চিঠিটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন...

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।