ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফতুল্লায় ভুল চিকিৎসায় মা-শিশুর মৃত্যু, আটক ৬

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮
ফতুল্লায় ভুল চিকিৎসায় মা-শিশুর মৃত্যু, আটক ৬ আটক ব্যক্তিরা। ছবি: বাংলানিউজ

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি বেসরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় মা ও শিশুর মৃত্যুর অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছে। এ সময় বিক্ষুব্ধদের শান্ত রাখতে পুলিশ হাসপাতালের চারজন মালিক ও ডাক্তার ও নার্সকে আটক করেছে।

শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় ফতুল্লার পাগলা বাজার এলাকায় অবস্থিত নিউ পপুলার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শিল্পি বেগম (৩২) ফতুল্লার পূর্ব দেলপাড়া এলাকার রং মিস্ত্রি  আলমগীর হোসেনের স্ত্রী।

আটক ছয়জন হলেন, হাসপাতালের মালিক ডা. মজিবুর রহমান, মাসুম আহমেদ, আহম্মদ আলী খান, কামরুন্নাহার, মেডিকেল অফিসার ডা. জামিল আহমেদ ও নার্স সুরমা বেগম।

নিহত নারীর স্বামী আলমগীর হোসেন বাংলানিউজকে জানান, তার স্ত্রী শিল্পি ৫ মাসের অন্তঃসত্বা ছিল। হঠাৎ অসুস্থবোধ করলে তাকে পাগলা বাজার এলাকায় অবস্থিত নিউ পপুলার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে ডাক্তার জেসিকা রিজভী তামান্না পরীক্ষা করে বলেন গর্ভের বাচ্চা নরমাল আছে তবে পানি ভাঙছে। কয়েকদিন হাসপাতালে ভর্তি রাখতে হবে। এতে শিল্পিকে বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি করি। শুক্রবার দুপুর থেকেই হাসপাতালের লোকজন বলছে অপারেশন করতে হবে। তখন আমি জানতে চাই গর্ভের সন্তান নরমাল থাকলে অপারেশন কেনো? তারা বললো রক্ত নিয়ে আসেন দ্রুত। এতে আমি রক্ত আনতে যাই। এরমধ্যে আমার স্ত্রীকে কোনো অনুমতি ছাড়াই অপারেশন করে সন্তান বের করে। এ সময় সন্তানসহ আমার স্ত্রী মারা যায়। আমি রক্ত নিয়ে এসে দেখি শিশুটির গলা কাটা আর আমার স্ত্রীর নিথর দেহ বেডে পড়ে আছে। নার্স ও ডাক্তাররা বলছে আপনার স্ত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হবে। তখন তারাই অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে দেয়। এতে আমার সন্দেহ হয়। এরপর তাদের লোকজনই জানায় তিনি মারা গেছেন। আমি এর বিচার চাই।

হাসপাতাল মালিক কামরুন্নাহার বাংলানিউজকে জানান, যখন পেটের পানি ভাঙা শুরু হয়েছে তখনই বলেছি রোগীকে অপারেশন করতে হবে রক্ত সংগ্রহ করেন। কিন্তু রোগীর স্বামী তা যথা সময় করেনি। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় তাকে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের সময় রোগী হার্ট স্টোক করেন। এর মধ্যেই অপারেশন করে ৫ মাসের শিশুটি পেট থেকে মৃত অবস্থায় বের করা হয়। তখন রোগীটির অবস্থা গুরুতর মনে হলে আমরা তাকে শুক্রবার রাত ১টায় ঢাকা মেডিকেলে স্থান্তান্তর করি। আমাদের চিকিৎসায় কোন ভুল ছিল না।

ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) দিদারুল আলম বাংলানিউজকে জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। হাসপাতাল কিছুটা ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।