ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফারমার্স ব্যাংকের সাত কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮
ফারমার্স ব্যাংকের সাত কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ঢাকা: সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে চলমান অভিযোগের অনুসন্ধানের স্বার্থে ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম শামীমসহ সাত কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইমিগ্রেশন পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপারের কাছে লেখা এক চিঠির মাধ্যমে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন দুদকের পরিচালক ইকবাল হোসেন।

চিঠিতে বলা হয়, পরস্পরের যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ‘দি ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেড, গুলশান শাখা থেকে চার কোটি টাকার লোন অনুমোদন করিয়ে ওই টাকা অন্য একজন ব্যক্তির নামে হস্তান্তর দেখিয়ে আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন  প্রধান কার্যালয়ে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ স্বপরিবারে দেশত্যাগ করে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সুষ্ঠু অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার নিমিত্তে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিদেশযাত্রা রোহিত করা আবশ্যক। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যাতে বিদেশ যেতে না পারেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা হলো। ’

যাদের বিরুদ্ধে দুদক এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তারা হলেন ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি একে এম শামীম, ব্যাংকের অন্য কর্মকর্তারা হলেন- এক্সিকিউটিভ অফিসার উম্মে সালমা, অ্যাসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক ক্রেডিট ইনচার্জ শফিউদ্দীন আহমেদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক ম্যানেজার (অপারেশন) লুতফুল হক, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক হেড অব বিজনেস গাজী সালাউদ্দীন ও ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়।

এদিকে এ অভিযোগে অভিযুক্ত সাতজনকে বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। তার আগের দিন (২৫ সেপ্টেম্বর) এক নোটিশের পরের দিনই অভিযুক্তদের তলব করেন দুদকের পরিচালক ও অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবাল হোসেন।

দুদকের উপ পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আগের ওই তলবি নোটিশেও বলা হয়, ফারমার্স ব্যাংকের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে চার কোটি টাকার লোন অনুমোদন করিয়ে ওই টাকা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির নামে হস্তান্তর দেখিয়ে আত্মসাত ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে।

যদিও দুদক তার নোটিশে কোথাও সাবেক বিচারপতি এসকে সিনহার নাম বলেনি। তবে ২৪ সেপ্টেম্বর দুদক চেয়ারম্যান বলেছিলেন, এ চার কোটি টাকা নিয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুদক। তবে বিষয়টি সেনসেটিভ ও এমন ব্যক্তি এর সঙ্গে জড়িত যে তা নিয়ে মন্তব্য করা দুদকের জন্য বিব্রতকর বিষয়।

অন্যদিকে বিচারপতি সিনহা তার সদ্য প্রকাশিত বই ‘ অ্যা ব্রকেন ড্রিম’ এ চার কোটি টাকা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, তিনি তার বাড়ি ৬ কোটি টাকা বিক্রি করেছেন। সেখান থেকে চার কোটি টাকা তার ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে। তা নিয়ে সরকার জল ঘোলা করার চেষ্টা করছে। এ কাজে ব্যবহার করছে দুদককে।

এদিকে চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল এ ঘটনায় ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি করে রাষ্ট্রের সে সময়ের এক ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির’ ব্যাংক হিসাবে জমা দেওয়ায় দুই ব্যবসায়ীকে তলব করে দুদক।

নিরঞ্জন চন্দ্র শাহা ও মোহাম্মদ শাজাহান নামে এ দুই ব্যবসায়ীকে ৬ মে সকালে দুদকে হাজির হতে বলেন কমিশনের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।

ওই দিন হাজির হয়ে ব্যাংক লোন ও ওই মামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দুদককে জানান অভিযুক্ত দুই ব্যবসায়ী।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮
আরএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad