ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

উজিরপুরে ইউপি চেয়ারম্যান হত্যা: আটক ৪ জন জেলহাজতে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৮
উজিরপুরে ইউপি চেয়ারম্যান হত্যা: আটক ৪ জন জেলহাজতে

বরিশাল: উজিরপুরের জল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু হত্যার ঘটনায় ৪ আসামিকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।

রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাদের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

এরা হলো, এজাহারভুক্ত আসামি সাইফুল সিকদার (৩০), হরশিত রায় (৪০), আইয়ুব আলী ফরাজী (৫০) ও সন্দেহভাজন আসামি মন্নান হাওলাদার ওরফে মান্নু (৩৩)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন জানান, গ্রেফতার হওয়াদের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হবে। পাশাপাশি মামলায় এজাহারভুক্ত বাকী আসামিসহ সন্দেহভাজনদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে জল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা সুকলাল হালদার শনিবার যে মামলাটি দায়ের করেছেন তাতে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুসের পিএস আবু সাঈদ রাঢ়ীকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে।  

এছাড়া শোলক ইউপি চেয়ারম্যান কাজী হুমায়ুন কবির, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জালাল মল্লিক, জল্লা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি তাইজুর রহমান পান্নু, ছাত্রলীগ সভাপতি মামুন শাহ ও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ২০০৪ সালে দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত অবনী ভূষণ বাড়ৈর ছেলে অচিন্ত বাড়ৈসহ ৩২ জনকে নামধারী অভিযুক্ত করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এজাহারের বিবরণ অনুযায়ী, বিবাদীরা মাদক ব্যবসাসহ সমাজের নানান অপরাধের সঙ্গে জড়িত। আর এসব অন্যায়কাজে চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ বিভিন্নভাবে বাধা দিলে বিবাদীরা তাকে বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলো। ঘটনার দিন শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে জল্লা ইউনিয়নের কারফা বাজারের দিশারী বস্ত্রালয়ে অবস্থানকালে চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদারকে মোটরসাইকেলে করে আসা ২ জন দুর্বৃত্তর মধ্যে একজন গুলি ও গুরুতর জখম করে। তখন চেয়ারম্যানের শরীরের ৬টি স্থানে গুলি করা হয়। এসময় মামলার সাক্ষী নিহার হালদার ও অভিতাভ চেয়ারম্যানকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে তাদেরও হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা ফাঁকা গুলি করতে করতে পালিয়ে যায়।  

চেয়ারম্যানসহ আহতদের উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। যারমধ্যে চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদারকে রাত পৌনে ১০ টার দিকে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এ ঘটনার পর স্থানীয় জনতা জেলহাজতে পাঠানো সাইফুল সিকদার ও মন্নান হাওলাদার ওরফে মান্নুকে আটকের পর পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের পরপরই স্থানীয় এমপির পিএস আবু সাঈদ রাঢ়ীর সম্পৃক্ত থাকার খবর ছড়িয়ে পড়ে। যে বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান ইকবাল নিজেও সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। যে কারণে এমপি কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।

ঘটনার দিন রাতে এমপি অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস শেবাচিম হাসপাতালে চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টুকে দেখতে গিয়ে স্বজনদের তোপের মুখে পড়েন। পরে তিনি সেখান থেকে পুলিশ পাহারায় বরিশাল-৩ আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট শেখ মো. টিপু সুলতানের গাড়িতে করে বাসায় যান।  

বাংলাদেশ সময়: ০৬১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৮
এমএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।