ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মানিকগঞ্জ বিআরটিএ: ৮ম শ্রেণির সনদ ছাড়া লাইসেন্স নয়!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮
মানিকগঞ্জ বিআরটিএ: ৮ম শ্রেণির সনদ ছাড়া লাইসেন্স নয়! বিআরটিএ মানিকগঞ্জ কার্যালয়। ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ: নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর ড্রাইভিং লাইসেন্স ও যানবাহনের ফিটনেসের বিরুদ্ধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। 

ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া যানবাহন চালানো এখন বেশ কষ্টের বিষয়। মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোতে বাড়ানো হয়েছে অতিরিক্ত চেক পোস্ট।

ড্রাইভিং লাইসেন্স বা ফিটনেস না থাকলেই দেওয়া হচ্ছে মামলা।
 
যে কারণে ব্যস্ততা বেড়েছে মানিকগঞ্জ বিআরটিএ কার্যালয়ে। তবে কাঙ্ক্ষিত লাইসেন্স পেতে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর বেশ ভোগান্তিতে পড়েছে লাইসেন্সের আবেদনকারীরা। এর মধ্যে আবার অষ্টম শ্রেণির সনদ ছাড়া লাইসেন্সের আবেদন ফরম জমা নিচ্ছে না মানিকগঞ্জ বিআরটিএ। যে কারণে বাড়তি ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকেই।  

রফিকুল ইসলাম নামে মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন জমা দিতে আসা এক বেসরকারি চাকরিজীবী বাংলানিউজকে জানান, প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন ফরম জমা দেওয়ার জন্য মানিকগঞ্জ বিআরটিএ অফিসে যোগাযোগ করা হয়।  

এ সময় ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের প্রমানপত্র, ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ, তিন কপি স্ট্যাম্প সাইজের ছবি ও পাসপোট সাইজের এক কপি নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়। এসব নিয়ে যাওয়ার পর আবেদন ফরম সত্যয়িত করে রোববার জমা দিতে আসলে অষ্টম শ্রেণির সনদ ছাড়া আবেদন ফরম রাখা সম্ভব নয় বলে জানান বিআরটিএ মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর খন্দকার সিরাজুল ইসলাম তপন।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মধ্য বয়সী এক ব্যবসায়ী জানান, তিনদিন চেষ্টার পর ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছি। ব্যাংক খুলে সকাল ১০ টায়। আর টাকা জমা দেওয়ার টোকেন নিয়ে সিরিয়ালে দাঁড়াতে হয় সকাল সাত টায়। প্রতিদিন মাত্র ৩০ টি টোকেন দেওয়া হয়। এভাবে চলে যায় তিন দিন।  

এরপর ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন ফরমে কোনো চিকিৎসক সত্যয়িত করে দিতে চায় না। পরে কাগজ সত্যয়িত করে আসার পর জানলাম অষ্টম শ্রেণির সনদ লাগবে। আমি তো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়া শেষ করার পর আর কখনো স্কুলে যাইনি। তবে ব্যবসার কাজে আমাকে নিয়মিত মোটরসাইকেল চালাতে হয়। আমার তো সনদ নাই। এখন কি করবো ভেবে পাচ্ছি না বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে কম্পিউটার অপারেটর খন্দকার সিরাজুল ইসলাম তপনের সঙ্গে সরেজমিনে যোগাযোগ করা হলে বাংলানিউজকে তিনি জানান, অষ্টম শ্রেণি পাশের সনদ ছাড়া সব প্রকার ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন ফরম জমা না নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বিআরটিএ মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক প্রকৌশলী মোবারক হোসেন।

মানিকগঞ্জ বিআরটিএ এর উপ-পরিচালক প্রকৌশলী মোবারক হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অষ্টম শ্রেণি পাস ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষায় পাস করা অসম্ভব। তাই গত কয়েকদিন ধরে অষ্টম শ্রেণি পাশের সনদ ছাড়া কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন ফরম জমা রাখা হচ্ছে না।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, অষ্টম শ্রেণি পাস ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন জমা নেওয়া যাবে না মর্মে যদি নতুন আইন পাস হয়ে থাকে তাহলে বিআরটিএ এর উদ্যোগ ঠিক আছে। আর যদি এমন কোনো আইন না থাকে তাহলে যে কারো আবেদন অবশ্যই জমা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮ 
কেএসএইচ/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।