ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গাজীপুর-নরসিংদীতে আর শিল্পস্থাপন নয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮
গাজীপুর-নরসিংদীতে আর শিল্পস্থাপন নয় টাস্কফোর্সের সভায় নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান

ঢাকা: অন্যান্য মহানগরের মতো এবার গাজীপুর ও নরসিংদী শহরে ইকোনমিক জোন ছাড়া কোনো শিল্পস্থাপন করা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নদী দূষণ ও নাব্যতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত টাস্কফোর্স।

টাস্কফোর্সের ৩৮তম সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান।  

বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রীর সভাপতিত্বে এ সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ।

 

সভায় সাভারের চামড়াশিল্প পার্কের মাধ্যমে ধলেশ্বরী নদী দূষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হলেও শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কেউ না থাকায় এ বিষয়ে পরবর্তীতে বিশেষ বৈঠকে আলোচনা করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভায় নদীর সীমানা জটিলতা নিরসনকল্পে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবে। নদী তীর দখল ও দূষণের হাত থেকে রক্ষাকল্পে আরো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বৈঠক শেষে জানানো হয়।  

সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, গাজীপুর মহানগর ও নরসিংদীতে নতুন করে আর শিল্প-কল কারখানা গড়ার অনুমতি দেওয়া যাবে না। নতুন শিল্প কল-কারখানা অর্থনৈতিক জোন এলাকায় গড়তে হবে। স্লোব করে নদী তীর বা খাল পাড় বাঁধাই করা যাবে না। খাড়া (সোজাসুজি) করে তীর বাঁধাই করতে হবে যাতে সেগুলো দখল হতে না পারে। প্রয়োজনে ওয়াকওয়ের সঙ্গে ড্রাইভওয়ে নির্মাণ  করতে হবে।

সভায় জানানো হয় যে ঢাকার চারপাশে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং উচ্ছেদকরা জায়গা যাতে পুনঃরায় দখল হয়ে না যায় সেজন্য উল্লেখিত নদীগুলোর উভয় পাশে ২২০ কিলোমিটার ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মিত হয়েছে।  

৫ অক্টোবর আশুলিয়াতে ৫০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। বাকি ১৫০ কিলোমিটার ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ কাজের প্রকল্প গ্রহণের স্টাডি চলমান রয়েছে। নদী তীরে বনায়ন ও সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকার শ্যামপুর ও নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে দু’টি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। আশুলিয়া, সিন্নিরটেক ও টঙ্গিতে আরো ৩টি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হবে।  

সভায়  আরো জানানো হয়, নদীর তীরের সীমানা চিহ্নিত করার লক্ষ্যে ৯ হাজার ৫৭৭টি সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৮৫৬টি পিলার নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিতর্কিত ১ হাজার ৭৫১ পিলারের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আগামী দু’মাসের মধ্যে বিতর্কিত ২ হাজার ১০৫টি পিলারের নিষ্পত্তি করা হবে। নতুন করে ১০ হাজার ৪০০ সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। নতুন সীমানা পিলারগুলো বড় ও দৃশ্যমান করে নির্মাণ করা হবে। বিআইডব্লিউটিএ নতুন করে ১৯টি আরসিসি জেটি নির্মাণ করবে।  

বিআইডব্লিউটিএ নদী তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৫০১ দশমিক ২৬ একর জমি উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে ঢাকার চারপাশে ৩০৭ দশমিক ২৬ একর এবং নারায়ণগঞ্জে ১৯৪ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৯ হাজার ৭৩০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৬ হাজার ৯৫১টি এবং নারায়ণগঞ্জে ২ হাজার ৭৭৯টি উচ্ছেদ করা হয়েছে।
 
সভায় জানানো হয়, ঢাকা শহরের ৪৬ খালের মধ্যে ২৬টি  খাল উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি খালের সংস্কার কাজ চলছে। নতুন করে খাল যাতে দখল হয়ে না যায় সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। সাভারস্থ ট্যানারি শিল্প এলাকায় কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধানাগার স্থাপন যথাযথ হয়নি। এ বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮
এজেড/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।