ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৩০ সেপ্টেম্বর ডিআইজি মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮
৩০ সেপ্টেম্বর ডিআইজি মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক

ঢাকা: হিসাব বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের আলোচিত উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্নাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দুদকের উপ পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী মিজান দম্পত্তিকে আসছে ৩০ সেপ্টেম্বর কমিশনে হাজির হতে নোটিস দিয়েছেন।

পরে দুদকের উপ পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে ১১ জুলাই অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক তথ্য পেয়ে সাত কর্মদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে তাদের নোটিস দিয়েছিল দুদক।

ডিআইজি মিজানের ঢাকা উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের বাসা, পুলিশ সদর দফতর ও গ্রামের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের ঠিকানায় এই নোটিসের কপি পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্নাকেও সম্পত্তির হিসাব দাখিলের জন্য নোটিস করা হয়েছে। এতে তাদের নিজের ও নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে থাকা সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে স্ত্রী-সন্তান রেখে আরেক নারীকে জোর করে বিয়ে ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই এক নারী সংবাদ পাঠককে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। পরে তাকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি তার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।

দুদক সূত্র জানায়, ডিআইজি মিজান পুলিশের উচ্চপদে থেকে তদবির, নিয়োগ, বদলিসহ অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে নানা উপায়ে শত কোটি টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ আসে দুদকে। এই অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে অনুসন্ধানের জন্য গত ১০ ফেব্রুয়ারি কমিশনের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে দায়িত্ব দেয় দুদক। এরপর গত ৩ মে মিজানকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এ অনুসন্ধান কর্মকর্তা।

ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার সাভারে পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটিতে তার নিজের নামে পাঁচ কাঠা জমি রয়েছে। এছাড়া পূর্বাচল নতুন শহর এলাকায় পাঁচ কাঠা, পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির অধীনে অ্যাডভান্স পুলিশ টাউনে সাড়ে সাত কাঠার প্লট ছাড়াও তিনি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় ৩২ শতাংশ জমিতে ২৪০০ বর্গফুটের দোতলা ভবন করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে এসেছে।

অন্যদিকে, ডিআইজি মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্নার নামে উত্তরা রেসিডেন্সিয়াল মডেল টাউনে এক হাজার ৭৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ৬৩ লাখ ৯০ টাকায় কেনা হয়েছে বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে দুদক। এছাড়া মিজানের ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান স্বপনের নামে রাজধানীর নিউ বেইলি রোডে দুই হাজার ৪০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

মেহেন্দীগঞ্জে ওষুধ ব্যবসা করে স্বপন ৫৫ লাখ ৫১ হাজার ৮৪০ টাকা দিয়ে এ ফ্ল্যাট কিনলেও এতে তার বড় ভাই মিজানের বিনিয়োগ থাকতে পারে বলে দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়।

মিজানের ভাগ্নে রাজধানীর কোতোয়ালি থানার এসআই মাহামুদুল হাসানের নামে নগরীর পাইওনিয়ার রোডে এক হাজার ৯১৯ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। ২০১৬ সালের আগস্টে মাহামুদুল এসআই পদে যোগ দেওয়ার আগে ৬৬ লাখ ১৮ হাজার ৮০ টাকা দিয়ে এই ফ্ল্যাট কেনা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

দুদক বলছে, ওই ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিনিয়োগের সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮
আরএম/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।