ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নড়িয়ায় ভাঙনরোধে নদী খনন কাজের জন্য সার্ভে শুরু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮
নড়িয়ায় ভাঙনরোধে নদী খনন কাজের জন্য সার্ভে শুরু পদ্মার ভাঙন। ছবি: বাংলানিউজ

নড়িয়া, শরিয়তপুর থেকে: শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায় পদ্মানদীর ভাঙনরোধে শিগগিরই খনন কাজ শুরু করতে যাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ। এজন্য পদ্মার তলদেশে সার্ভের কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। এছাড়াও একটি খনন যন্ত্র সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) শরিয়তপুরের নড়িয়া এসে পৌঁছেছে। আরো একাধিক খনন যন্ত্র দু ’দিনের মধ্যেই আসবে।

মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা ইয়াসমিন এ তথ্য জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায় পদ্মানদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বিস্তৃর্ণ জনপদ।

উপজেলার কেদারপুর, মূলফৎগঞ্জ ও বাঁশতলা এলাকা প্রবল ভাঙনে মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে। হাজার হাজার পরিবার গত  একমাসের ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ভবনের একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হাসপাতাল সংলগ্ন কমপক্ষে ৩০টি ফার্মেসি, অসংখ্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও ক্লিনিক গত একমাসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড মূলফৎগঞ্চ বাজারের কাছে পদ্মানদীতে জিও ব্যাগ ফেলছে। তবে তাতে তেমন কোনো কাজ দিচ্ছে না বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

পদ্মার ভয়াবহ ভাঙন ঠেকানোর জন্য নদীতে খনন কাজ করে নদীর স্রোতের গতি পথ পরিবর্তনের চিন্তাভাবনা করছে কর্তৃপক্ষ। এলক্ষ্যে বিআইডবিøউটিএ’র একটি ড্রেজার ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে এবং আরো কয়েকটি ড্রেজার দুই/একদিনের মধ্যেই আসবে।

নড়িয়া উপজেলা ইউএনও সানজিদা ইয়াসমিন বলেন, ড্রেজিং কাজ শুরু করার আগে নদীতে সার্ভে প্রয়োজন। ইতোমধ্যেই সেই সার্ভে কাজ শুরু করেছে বিআইডব্লিউটিএ। যা খনন কাজেরই একটা অংশ। নদীর তলদেশে সার্ভে কাজ শেষ হলেই খনন কাজ শুরু হবে। ’

তিনি আরো বলেন, নদীর এ ভাঙনরোধে ¯্রােতের গতিপথ পরিবর্তন জরুরি। খনন কাজের মাধ্যমে আশা করা যাচ্ছে ভাঙনরোধ করা সম্ভব হবে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,‘পদ্মায় তীব্র ¯্রােত রয়েছে। আর এই ¯্রােতের  কারণেই শরিয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা এলাকার পাড় ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙনরোধে নদীর মাঝের চর কেটে দিয়ে ¯্রােতের গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্টা করা হবে। চর কেটে দিলে পানি অন্যত্র দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে এইপাড়ে ¯্রােতের চাপ কমে যাবে। নড়িয়া-জাজিরা অংশে ৯ দশমিক ৭৯ কিলোমিটার ড্রেজিং করা হবে।

এদিকে গত রবিবার পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) সচিব কবির বিন আনোয়ার নড়িয়ার ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভাঙনকবলিত এলাকায় ড্রেজিং কাজ শুরু হবে এবং পানি কমলেই এলাকায় বাধেঁর কাজ শুরু করবে সরকার।

তিনি জানিয়েছেন, ‘স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধের জন্য শরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার পদ্মানদীর ৯ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ‘পদ্মার ডান তীররক্ষা প্রকল্প’ নামের একটি প্রকল্প গত ২ জানুয়ারি একনেক সভায় পাস হয়েছে। পদ্মাসেতু থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৯৭ কোটি টাকা। ২০২১ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বর্তমানের পদ্মার ভাঙনের তীব্ররোধে জুলাই মাসে সাড়ে ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ অর্থ দিয়ে ১১ জুলাই থেকে ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।