ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

চলছে একনেক সভা, টেবিলে ইভিএম কেনা প্রকল্প

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮
চলছে একনেক সভা, টেবিলে ইভিএম কেনা প্রকল্প

ঢাকা: ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, ত্রুটিমুক্ত, বিশ্বাসযোগ্য ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর করতে দেড় লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দেড় লাখ ইভিএম কেনা প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। একনেক সভায় মোট ১৩টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়েছে।

এর মধ্যে ১৩ নম্বরে রাখা হয়েছে ইভিএম কেনা প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা সকালে শুরু হয়েছে।

এ প্রকল্পে প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮২১ কোটি ৭ লাখ টাকা। শুধু দেড় লাখ ইভিএম, সিস্টেম এবং সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ৩ হাজার ৫১৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ফলে প্রতি ইউনিট ইভিএমের দাম পড়ছে প্রায় দুই লাখ টাকা।

প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ চলতি সময় থেকে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত।
 
ইসি’র পাঠানো প্রস্তাবনায় দেখা গেছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ৩ হাজার ১১০ জন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্বাচন প্রক্রিয়া বিষয়ে সামগ্রিক দক্ষতা বৃদ্ধি, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বিষয়ক জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

নানা যুক্তি তুলে ধরে বিশাল ব্যয়ের প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব করেছে ইসি। প্রস্তাবনায় ইসি জানায়, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের মূল দায়িত্ব হলো জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করা।
 
ইসি নিজেদের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে জানায়, প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে কমিশনকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্বাচনী উপকরণ বিতরণ, ব্যালট পেপার ব্যবস্থাপনা, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া, ব্যালট পেপার ও বাক্স ছিনতাই সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। ফলে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয় এবং নির্বাচন কমিশনকে দেশে-বিদেশে সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়। স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচন উপহার দিতে ইভিএম’র বিকল্প নেই।

ফলে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণার কাজে ইসি ইভিএম প্রচলনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০১১ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বুয়েটের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ইভিএম ব্যবহার করা হয়।  পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হয় এসব নির্বাচনে ইভিএম’র যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে ২০১৩ সালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হয়নি।
 
প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া আরও সুষ্ঠু ও অবাধ করতে ইভিএম ব্যবহারে আবারও উদ্যোগ নেয় ইসি। ইতোপূর্বে ব্যবহৃত ইভিএমের ত্রুটিগুলো বিবেচনায় রেখে সম্পূর্ণ নতুন কনফিগারেশনের অত্যাধুনিক ও নির্ভরযোগ্য ইভিএম ব্যবহারে উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইভিএম প্রস্তুতের জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নের উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দক্ষ ও আইটি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীকে উপদেষ্টা করে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। এই কারিগরি কমিটির পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) নতুন কনফিগারেশনের উন্নত মানের ইভিএম প্রস্তুত করে।
 
আপডেট করা নতুন ইভিএম মেশিন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন-২০১৭ এর পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হয়। এই নির্বাচনের একটি কেন্দ্রের ছয়টি কক্ষে ইভিএম’র ব্যবহারের মাধ্যমে সফলতার সঙ্গে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করা হয়। ভোটগ্রহণ শেষে প্রতিটি কক্ষে ভোট গণনার সময় লাগে মাত্র এক মিনিট। দেশি-বিদেশি এবং নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মিডিয়া এবং সর্বসাধারণের মত অনুযায়ী ইভিএম পরিচালিত কেন্দ্রের ভোট নিরপেক্ষ, সহজ এবং সময়বান্ধব হয়েছে। এসবের আলোকে মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী অ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, ধাপে ধাপে দেড় লাখ ইভিএম কেনা হবে। আসন্ন নির্বাচনে সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮
এমআইএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।