ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সৈয়দ মহসীন আলীর মৃত্যুবার্ষিকীতে বিভিন্ন কর্মসূচি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮
সৈয়দ মহসীন আলীর মৃত্যুবার্ষিকীতে বিভিন্ন কর্মসূচি সৈয়দ মহসিন আলী

মৌলভীবাজার: প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসিন আলীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর)। ২০১৫ সালের এইদিনে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

সৈয়দ মহসিন আলীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের মহসীন আলী ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ও তার অঙ্গসংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, সকালে প্রয়াত মহসিন আলীর কবরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

পরে বাসায় মিলাদ ও এতিমদের খাবার বিতরণ করা হয়। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সভা ও দেয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

সৈয়দ মহসিন আলী ১৯৪৮ সালের ১২ ডিসেম্বর এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ আশরাফ  আলী। মায়ের নাম আছকিরুনন্নেছা খানম। পাঁচ ভাইদের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন।

ছাত্র জীবনেই মহসিন আলী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭১ সালে ২৩ বছর বয়সে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। সম্মুখসমরে যুদ্ধ চলাকালে গুলিবিদ্ধও হয়েছিলেন তিনি।  

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি মৌলভীবাজারের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রমে আরো সক্রিয় হয়ে পড়েন। রাজনীতির বাইরে সৈয়দ মহসীন আলী একজন সমাজিক সংগঠক ও সাংবাদিক ছিলেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত মহসীন আলী মৌলভীবাজার মহকুমা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিতে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৪ সাল থেকে মৌলভীবাজার পৌরসভায় পরপর তিন বার বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে তাকে শ্রেষ্ঠ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করে। এরপর সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় ২০০৮ সালে মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তারপর ২০১৪ সালে আবারো এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর একই বছর ১২ জানুয়ারি তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন।  

রাষ্ট্রের দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজসেবা মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজান তিনি। সমাজের প্রকৃত উন্নয়নে কাজ করেন। সেই অবদান রাখার জন্য-২০১৫ সালে সৈয়দ মহসিন আলী ভারতের আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন রিসার্চ সোসাইটির কাছ থেকে ‘আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন স্মৃতি স্বর্ণপদক-২০১৪’ লাভ করেন এবং ‘হ্যালো কলকাতা’ নামে কলকাতাভিত্তিক একটি সমাজকল্যাণ প্রতিষ্ঠান তাকে ‘নেহেরু সাম্য সম্মাননা-২০১৪ পুরষ্কারে ভূষিত করেন।  

এছাড়াও দেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেন।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে নিজের জমি বিক্রি করে দেওয়ার দৃষ্টান্ত তিনি দেখিয়েছিলেন। একজন সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে তার খ্যাতি ছিলো। মহসীন আলী ছিলেন একজন সাহিত্য ও সংস্কৃতিমনা মানুষ। এককালে তিনি বাংলাটাইমস পত্রিকায় সাংবাদিকতা করতেন সেই সুবাধে দেশের অনেক খ্যাতিমান সাংবাদিতরা তার বন্ধু ছিলেন। গান আর কবিতা তার পছন্দের শীর্ষে ছিলো। সে সুবাধে অনেক গায়ক আর কবির সংস্পর্শে থেকেছেন। বক্তৃতার মঞ্চে গানও গেয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।