ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘ঘর বিলীন হচ্ছে মানুষ কাঁদছে, এটা দেখেও কান্না পাচ্ছে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮
‘ঘর বিলীন হচ্ছে মানুষ কাঁদছে, এটা দেখেও কান্না পাচ্ছে’ সমৃদ্ধ জনপদকে বিলীন করে নিচ্ছে প্রমত্তা পদ্মা। ছবি: বাংলানিউজ

নড়িয়া, শরীয়তপুর থেকে ফিরে: শরীয়তপুর জেলার প্রাচীন জনপদ নড়িয়া উপজেলা। এটি নানা কারণে সমৃদ্ধ এক জনপদ। এখানকার বিপুল সংখ্যক কর্মক্ষম মানুষ পাড়ি জমিয়েছে ইউরোপ-মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্সে এ অঞ্চলে লেগেছিল উন্নয়নের হাওয়া। সব মিলিয়ে অর্থনৈতিকভাবে বেশ শক্ত অবস্থানে পৌঁছে যায় নড়িয়া।

কিন্তু এই সমৃদ্ধ জনপদকে বিলীন করে নিচ্ছে প্রমত্তা পদ্মা। গত এক মাস ধরে পদ্মার সর্বনাশা থাবায় বিলীন হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বাজার, মানুষের ভিটেমাটি।

বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজিমনে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় গিয়ে দেখা এমনই দৃশ্য দেখা যায়। পদ্মার প্রবল স্রোতের টানে কাঁপন ধরাচ্ছে মানুষের মনেও।

নড়িয়া পৌর এলাকার প্রাচীন সমৃদ্ধময় মুলফৎগঞ্জ বাজার। বাজারকে কেন্দ্র করে পুরো এক কিলোমিটার জায়গাজুড়ে বর্তমানে নদীর পাড়ে রয়েছে বেশ কতগুলো বড় বড় অট্টালিকা। কোনোটি নদীর একবারে পাড়ে, কোনোটি অর্ধেক চলে গেছে নদীর মাঝে আবার কোনোটির শুধু ভিটে পরে আছে। চারদিকে শুধু নদী ভাঙনের ক্ষতচিহ্ন দেখা যায়।

মানুষের সর্বস্ব কেড়ে নেওয়ার এই দৃশ্য কাঁদাচ্ছে আশপাশের অন্যদেরও। শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলায় ব্যবসায়ী সুমন মিয়া নড়িয়াকে পদ্মার বুকে হারিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘পদ্মার ভাঙনের এ দৃশ্য দেখলে দুঃখ লাগে। গ্রামের পর গ্রাম হারিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা শহরের বড় বড় অট্টালিকা নিমিষেই হারিয়ে যাচ্ছে পদ্মার বুকে!’

গিয়াস উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি বাংলানিউজকে বলেন, ‘নড়িয়া পদ্মার বুকে চলে যাচ্ছে। ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। আমরা ভাঙন দেখতে এসেছি। কষ্ট লাগে এ দৃশ্য দেখলে। মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে যাচ্ছে। মানুষ কাঁদছে। আমাদেরও এ দৃশ্য দেখে কান্না পাচ্ছে। ’

নড়িয়া পৌর এলাকার বিস্তীর্ণ জনপদ বিলীন হচ্ছে পদ্মায়। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) পৌর এলাকার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের অর্ধেক নদী গর্ভে চলে গেছে। তবে ভাঙনরোধে নদীতে জিও ব্যাগ ফেলতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।