ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পিডব্লিউডির অবহেলায় স্থগিত করতে হয় সংসদ কার্যক্রম!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮
পিডব্লিউডির অবহেলায় স্থগিত করতে হয় সংসদ কার্যক্রম! মঙ্গলবার বিদ্যুৎবিভ্রাটে সংসদ কার্যক্রম স্থগিত হয়

ঢাকা: জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের দায় সবাই এড়িয়ে গেলেও সংসদ ভবন রক্ষাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত অধিদপ্তরের (পিডব্লিউডি) কর্মকর্তাদের অবহেলাকেই এ জন্য দায়ী করছেন সংসদ ও বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্টরা।

নজিরবিহীন এ ঘটনায় সংসদ অধিবেশনের মঙ্গলবারের সব কার্যক্রম স্থগিত করতে ডেপুটি স্পিকার বাধ্য হলেও সংসদে কর্তব্যরত পূর্ত কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেননি উল্টো দায় চাপিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগ ও ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষের (ডিপিডিসি) কাঁধে। মেঘনা ঘাটের ৪০০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রিডের কাল্পনিক সমস্যার অজুহাত দেখিয়ে নিজেদের দায় সারেন পিডব্লিউডির দায়িত্বশীলরা।

এদিকে বিদ্যুৎ গ্রিডে কোনো সমস্যা হয়নি জানিয়ে এ ঘটনার জন্য স্থানীয় পিডব্লিউডি’কে দায়ী করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। দায় যে তাদের নয় তা প্রমাণে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে এরইমধ্যে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব ফয়জুল আমীনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি এবং ডিপিডিসির পরিচালক (অপারেশন) এ টি এম হারুনুর রশীদকে প্রধান করে চার সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জাতীয় সংসদে নেমে আসে অন্ধকার। বিকেল ৫টায় সংসদ অধিবেশন শুরুর পনের মিনিট আগে বিদ্যুৎ চলে গেলেও সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাইন দিতে না পারায় সংসদের বেশিরভাগ ব্লক অন্ধকারে ছেয়ে যায়। এজন্য অধিবেশনও শুরু হয় পনের মিনিট পর। তবে কিছু কিছু ব্লকে জেনারেটর নিয়ে আলোর ব্যবস্থা করে ঘণ্টা খানেক অধিবেশন চলার পর  ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া সংসদের সব কাজ স্থগিত করে অধিবেশন মুলতবি করে দেন।  

এ বিষয়ে পরে ডেপুটি স্পিকার বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় অধিবেশন চালানো সম্ভব হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা আমাদের জানিয়েছেন, মেঘনা ঘাটের ৪০০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রিডে কারিগরি সমস্যা দেখা দেওয়ায় সংসদে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এজন্য সংসদের অধিবেশন মুলতবি করা হয়েছে।

সংসদের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তা এলেও সংসদের লাইন  দেওয়া যাচ্ছিল না। বারবার কেটে যাচ্ছিল। এজন্য এখন আর লাইন দেওয়ার সাহস পাচ্ছেন না কর্মকর্তারা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে লাইন দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিপিডিসির প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মো. রমিজ উদ্দিন সরকার বলেন, মেঘনাঘাটের বিদ্যুৎকেন্দ্র ট্রিপ করায় পিজিসিবির আমিনবাজারের ১৩২ কেভি গ্রিড লাইন ‘ট্রিপ’ করে। এতে আমিন বাজার থেকে সংসদ ভবনে আসা ডিপিডিসির লাইনটিতে লো ভোল্টেজের সমস্যা হয়। যার ফলে ডিপিডিসির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জেনারেটর চালু হয়ে যায়। ডিপিডিসির কোনো সমস্যা ছিল না।  

তবে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী বলেন, আমাদের কোনো লাইন ট্রিপ করেনি। ফলে পিজিসিবির লাইনের কারণে এ ঘটনা ঘটেনি।  

পিজিসিবির কর্মকর্তারা বলছেন, এটা ডিপিডিসি বা পিজিসিবির সমস্যা নয়। যেহেতু সংসদের বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব পালন করে গণপূর্ত (বিদ্যুৎ) বিভাগ তাদের কোনো সমস্যা হতে পারে।  

এ ব্যাপারে গণপূর্তের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কেউই এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
এসএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।