ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এতো বড় আন্দোলনের পরও মানুষ যত্রতত্র রাস্তা পার হচ্ছে

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
এতো বড় আন্দোলনের পরও মানুষ যত্রতত্র রাস্তা পার হচ্ছে

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: রাস্তা পারাপারের সময় জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে অবস্থার পরিবর্তন হবে না।

বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরকালে জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত সংসদ সদস্য নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাস্তা পারাপরে জনসাধারণেরও সচেতন হওয়া উচিত।

রাস্তা পারাপারে সময় অনেকেই যানবাহন চলাচল অবস্থাতেই হঠাৎ করে রাস্তা পার হয়ে যান। এসময় দ্রুতগামী যানবাহন কিভাবে হঠাৎ করে থামবে?  এই বিষয়টিও দেখতে হবে।  

‘অনেক সময় দেখা যায় মা-বাবা বাচ্চার হাত ধরে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। এমনকি যুবক, তরুণরাও ওভারপাস, আন্ডারপাস ব্যবহার না করে দৌড়ে রাস্তা পার হয়। এসময় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে কার দোষ?

‘কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই দেখা যায় গাড়ির চালককে ধরতে পারলে মারতে মারতে মেরেই ফেলা হয়। সেই ভয়ে চালক দ্রুত গাড়ি টেনে চলে যায়, এতে দুর্ঘটনায় পড়া ব্যক্তি বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। কাজেই আইন কারও হাতে তুলে নেওয়া উচিত না। দুর্ঘটনা ঘটলে চালককে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন’।

‘এতো বড় আন্দোলনের পরও মানুষ যত্রতত্র রাস্তা পার হচ্ছে। আমাদের জনসাধারণের যথেষ্ট সচেতনতার অভাব রয়েছে। আন্ডারপাস আছে, ওভার ব্রিজ আছে, অথচ যত্রতত্র রাস্তা পার হয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের সচেতন হওয়া উচিত। দুর্ঘটনা ঘটলে চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিন্তু যারা হঠাৎ করে দৌড় দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এই অবস্থার পরিবর্তন হবে না। সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলা উচিত’।

নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরীর তারকা চিহ্নত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপদ সড়ক সংক্রান্ত ৯ দফা দাবির অধিকাংশই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে, যা সংসদের চলতি অধিবেশনে উপস্থাপিত ও বিবেচিত হবে। এ আইনে অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া ঘাতক বাস দু’টির চালক, হেলপার ও মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনের আওতায় কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের প্রতি আমি অত্যন্ত ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার কার্যক্রম নিবিড়ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। এতে দৃশ্যমান অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এছাড়া চার বছর মেয়াদী ন্যাশনাল রোড সেইফটি অ্যাকশন প্ল্যান ২০১৭-২০ প্রণয়ন করা হয়েছে, যা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া একটানা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাড়ি না চালানোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। দূরপাল্লার বাসে দুইজন চালক রাখার জন্য মালিকদের অনুরোধ করা হয়েছে।  

‘কোনো অবস্থাতেই স্পেসিফিকেশন বহির্ভূত মোটরযান রেজিস্ট্রেশন না দেওয়া, ত্রুটিপূর্ণ মোটরযানের ফিটনেস নবায়ন না করা এবং স্পেসিফিকেশন বহির্ভূত বাস ও ট্রাকের বডি নির্মাণের কারখানাগুলো পরিদর্শন করে এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মহাসড়কে চলন্ত গাড়ির স্পিড কন্ট্রোলের বিষয়ে দূরপাল্লার বিভিন্ন বাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার এবং ট্রাকের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।

যানজট দূর করতে সরকারের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই যানজট আছে। আমাদের  দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন যত হচ্ছে তারা ততো বেশি গাড়ি ব্যবহার করছে। এ কারণে গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। তবে আমরা যানজট নিরসনে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। ঢাকা শহরে অনেক ফ্লাইওভার হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে হচ্ছে। আরও ফ্লাইওভার হবে। পুরো ঢাকা শহর ঘিরে রিং রোড করে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
এসএম/এসকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad