ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

গুজব শনাক্তকরণ-নিরসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা হবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৮
গুজব শনাক্তকরণ-নিরসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা হবে মতবিনিময় সভায় তথ্যমন্ত্রীসহ অতিথিরা, ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব রুখতে ‘গুজব শনাক্তকরণ ও নিরসন কেন্দ্র’ সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

বিএনপি-জামায়াত চক্র গুজব রটনা সৃষ্টিতে পারদর্শী উল্লেখ করে গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
 
মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গুজব: গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।


 
মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি ফেসবুক, টুইটার বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আসার পরে এই বিষয়টা আবার নজরে এসেছে। গুজব রটনা সাধারণ অপরাধীরার পাশাপাশি বিদেশি চর, বিদেশি মহল করে থাকে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব রটনা এবং মিথ্যাচারের যে ঢেউ উঠেছে, সেখানে সাধারণ অপরাধ চক্রের কথা বাদ দিলে আমি সরাসরি চিহ্নিত করছি বাংলাদেশ এবং পৃথিবীতে ইদানিং সব চাইতে এগিয়ে আছে সাম্প্রদায়িক মহল, জঙ্গি মহল। তারা ক্রমাগত ধর্মের অপব্যাখ্যা এবং মিথ্যাচার ও গুজব রটনাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। যারা সাম্প্রদায়িক বোমার মালিক, তারাই গুজব বোমা ফাটায় এবং গুজব বোমার জন্ম দেয়। তারাই ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে।
 
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে গুজব রটছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উনি মরে যাচ্ছেন, এটা বাজে কথা। উনি সুস্থ আছেন এবং ডাক্তারের পরামর্শে আছেন। উনি অসুস্থ আছেন বলে একটা গুজব রটিয়ে সহানুভূতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। উনার দণ্ড নিয়েও গুজব, মিথ্যাচার করা হচ্ছে, দণ্ডটা ভুয়া, সঠিক যাচাই-বাছাই করে প্রকাশ্যে আদালতে বিচার হয়নি। ’

‘আপনারা জানেন, আদালত প্রকাশ্য। যে আদালতে উকিল, সাংবাদিক ঢুকতে পারে, আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারে। বিচার কাজ প্রকাশ্যে চলে সে আদালত ভুয়া হতে পারে না। রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য গুজব রটানোর চেষ্টা চলছে। ’
 
নির্বাচন নিয়েও সন্দেহ তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রামে-গঞ্জে যাবেন সবাই জিজ্ঞেস করছে নির্বাচনটা হবে? বিএনপি-জামায়াত চক্র এবং কতিপয় মহল বলেই দিয়েছে নির্বাচন করতে দেবে না, নির্বাচন বাংলাদেশে হবে না। নির্বাচন সম্পর্কে একটা সন্দেহের ফানুস তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যা সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি করতে পারে।
 
‘মিথ্যাচার বা গুজব উৎপাদনের প্রধান কারখানা হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত সাম্প্রদায়িক জঙ্গি চক্র। এটা আমি অভিযোগ দিচ্ছি প্রকাশ্যে। ’
 
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গুজব রটনাকারীদের ওপরে যখন আমরা হস্তক্ষেপ করি, তখন একটা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। একটা মহল বলে গণতন্ত্র গেলো, বাক-স্বাধীনতা গেলো বলে হইচই শুরু করে। ফলে গুজব রটনাকারী এবং মিথ্যাচারে যারা আশ্রয় নেয় তারা রেহাই পেয়ে যায় এবং দেশে বিভ্রান্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।
 
‘কিন্ত ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পবিত্রতা যদি রক্ষা করতে চান, তাহলে গুজব রটনাকারীদের কালো থাবা থেকে রক্ষা করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। যেটা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না। ’
 
মন্ত্রী আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলে নিচ্ছি, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর যে অঙ্গীকার সেটার ধারাবাহিকতায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের স্বাধীনতা অব্যাহত থাকবে। এ মাধ্যমের পবিত্রতা বা স্বাধীনতা রক্ষার জন্য গুজব ও মিথ্যাচার রটনাকারীদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
 
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজবকে ‘আপদ’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই আপদ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ‘গুজব শনাক্তকরণ ও নিরসন কেন্দ্র’ সরকারিভাবে করা দরকার। এটা আলোচনা করে ঠিক করবো, আন্তমন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে কীভাবে এটাকে দ্রুত সচল করা যায়। কীভাবে ফেসবুকের গুজব এবং মিথ্যাচার জনগণ মোকাবেলা করবে। এজন্য জনগণকে শিক্ষাও দিতে হবে।
 
অনেকে বেনামে ফেসবুক ব্যবহার করে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা দেশের শত্রু, সমাজের শত্রু। নাম গোপন করা যতো আইডি আছে, সবগুলো বাতিল করার জন্য সকল পদক্ষেপ সরকারকে নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, সচিব আবদুল মালেক, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার ওই সভায় অতিথির বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৮
এমআইএইচ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।