ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পুলিশ বলে কথা!

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৮
পুলিশ বলে কথা! স্বেচ্ছাসেবীকে একরকম ধাক্কা দিয়ে নিয়ম না মেনে রাস্তা পার হচ্ছেন পুলিশ, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: পুলিশ কনস্টেবল ফুটওভার ব্রিজের নিচ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এসময় রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবী তার পথরোধ করে দাঁড়ালেন। তাকে অনেক অনুরোধ করলেন ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করার জন্য।

কিন্তু কে শোনে কার কথা। অনেকটা গরম দেখালেন ওই কনস্টেবল।

পারলে স্বেচ্ছাসেবীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে পার হয়ে যান। অবশেষে ক্ষান্ত দিলেন স্বেচ্ছাসেবী কিশোর মজুমদার। আর ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হয়ে গেলেন পোশাক পরিহিত পুলিশ।

এমন কাণ্ড দেখে পথচারী ও বাসযাত্রীরা ছিঃ! ছিঃ! করছিলেন। একজন তো বলেই বসলেন, আগে পুলিশকে ঠিক হতে হবে। না হলে মানুষ তাদের কথা শুনবে কেন? এদের মতো কিছু লোকের কারণে পুলিশের দুর্নাম হচ্ছে।

তখন দুপুর ঠিক ১২টা। বাংলামোটর মোড়ে তপ্ত রোদে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে স্বেচ্ছাসেবী কিশোর মজুমদারের কপালে।

তার কাছে প্রশ্ন করা হয়, পুলিশের আচরণ কেমন ছিল, মলিন মুখে বললেন, তিনি আমার কথা শুনতেই চাইলেন না। আমার কথা শুনলে হয়তো তার ভাবান্তর হতো।

পুলিশ কথা না মানলেও অন্যান্য পথচারীরা কিন্তু ঠিকই বাধা পেয়ে ঘুরে গিয়ে ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে। তবে সুযোগ পেলেই লোকজনকে দৌঁড় দিতে দেখা গেছে।

অন্যদিকে, একই এলাকার রূপায়ন টাওয়ারের সামনে জেব্রা ক্রসিংয়ে এলোমেলোভাবে পার হওয়া লোকজনকে ঠেকাতে গলদঘর্ম পুলিশ ও কিশোর মজুমদারের সহকর্মীরা।

সেখানে এক অভিনব শাস্তি দিতেও দেখা গেলো নিয়ম না মেনে রাস্তা পার হওয়া হাসান নামে এক কনস্টেবলকে। ‘শাস্তি’ হিসেবে এ সময় স্বেচ্ছাসেবীরা তাকে ক্রসিং দিয়ে ঘুরে আবার রাস্তার ওপারে যাওয়ার কথা বলেন। এরপর নিয়ম মেনে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হন কনস্টেবল হাসান।  নিয়ম না মেনে দাঁড়িয়ে আছে বাস, ছবি: বাংলানিউজমিনিট বিশেক দাঁড়ালে পথচারীদের চালচল দেখলে অবাক হতে হচ্ছে। ৮০ ভাগ লোকেই নিয়ম মানতে চায় না। পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা লাটিমের মতো বনবন করে ঘুরছেন! আবার বাসগুলোও নির্ধারিত স্টপেজে দাঁড়াতে চায় না। কারওয়ান বাজারমুখী রাস্তায় বাসগুলো সিগন্যাল ঘেঁষে পথরোধ করে দাঁড়াচ্ছে। অথচ ৫০ গজ দূরে নাভানা জোহরা টাওয়ার পার হয়ে শোভা পাচ্ছে বাস স্টপেজ শুরু লেখা সাইনবোর্ড। সেখানে একটি বাসও দাঁড়াতে দেখা গেলো না। স্বেচ্ছাসেবীদের বাঁশি গায়েই নিচ্ছে না। ট্রাস্ট পরিবহনের একটি বাসতো ঠিক মোড়ের ওপর রাস্তা বন্ধ করে যাত্রী তুলে তবেই চলে গেলো।

দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ আব্দুর রহমানের কাছে প্রশ্ন ছিল, কোনো বাসইতো স্টপেজে দাঁড়াচ্ছে না? এসময় তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ধরে ধরে ‘বাটাম’ দিতে হবে। না হলে কাজ হবে না।

স্বেচ্ছাসেবী কিশোর মজুমদার বাংলানিউজকে বললেন, আমার মনে হয়  সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এজন্য ক্যাম্পেইন বাড়ানো দরকার। রেডক্রিসেন্ট থেকে বাংলামোটর, রূপসীবাংলা মোড় ও শাহবাগে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেকেই কথা মানছে, আর অল্প সংখ্যাক লোক মানতে চাচ্ছে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৮
এসআই/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।