ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাদেশ-নেপাল বাণিজ্য বাড়াতে একমত দুই প্রধানমন্ত্রী 

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৮
বাংলাদেশ-নেপাল বাণিজ্য বাড়াতে একমত দুই প্রধানমন্ত্রী  বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি

কাঠমান্ডু (নেপাল) থেকে: বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিশেষ করে বিদ্যুৎ সেক্টরে সহযোগিতা বাড়াতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী একমত হয়েছেন।

চতুর্থ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে নেপাল সফরত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকালীন আবাসস্থল হোটেল সোয়ালটি ক্রাউনি প্লাজায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

 

পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্ত প্রেস সচিব নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার পাশাপাশি আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিশেষ করে বিদ্যুৎ সেক্টরের উন্নয়নে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া দুই নেতা আঞ্চলিক কানেকটিভিসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন বলে জানান ইহসানুল করিম।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে নেপালের সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন।

এ অঞ্চলের সবার অভিন্ন সমস্যা দারিদ্র্যতা বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের লক্ষ্য দারিদ্র্য নির্মূল করা। আমরা শুধু নিজেরাই উন্নয়ন করতে চাই না, আঞ্চলিক উন্নয়ন চাই।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলো ব্যবহারের সুযোগের কথা তুলে ধরে নেপালকে এসব বন্দর ব্যবহার করার প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দুযোর্গ মোকাবিলা পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, দুযোর্গ ব্যবস্থাপনায় নেপাল বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারে।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে নেপাল আসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠকে নেপাল থেকে ৫০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশে আমদানির বিষয়েও আলোচনা করেন।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ও নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব,  দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব, নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুটানের অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দাসো শেরিং ওয়াংচুকের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এর আগে চতুর্থ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৮ মিনিটে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ত্রিভুবন বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী ঈশ্বর পোখারেল ও কাঠমান্ডুতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামসসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানকে দেওয়া হয় লালগালিচা সংবর্ধনা। এসময় তাকে গার্ড অব অনারও দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ভুটানের অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দাসো শেরিং ওয়াংচুক, শ্রীলংকান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রিয়ুথ চ্যান-ও-চার বিমসটেক সম্মেলন যোগ দিতে নেপাল এসেছেন।

বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে সন্ধ্যা ৬টায়।

বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সাত দেশের জোট বিমসটেক (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন)। প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার উদ্দেশ্যে এ জোট গঠিত।
 
১৯৯৭ সালে ব্যাংকক ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডে এ উদ্যোগের সূচনা হয়। পরে মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটান বিমসটেকে যোগ দেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৮
এমইউএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ