ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই হত্যা করেছে নদীকে, দাবি পরিবারের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৮
শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই হত্যা করেছে নদীকে, দাবি পরিবারের

পাবনা: সাংবাদিক সুবর্ণা আক্তার নদীর দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলায় নিশ্চিত পরাজয় জেনে সাবেক শ্বশুরবাড়ির লোকজনই তাকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার। 

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুবর্ণা নদীর সাবেক শ্বশুর ও ইড্রাল ফার্মাসিটিক্যাল ও শিমলা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেনকে আটক করা হয়েছে।

** সুবর্ণা হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) রাতে শহরের রাধানগরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বেসরকারি আনন্দ টেলিভিশনের পাবনা প্রতিনিধি সুবর্ণা আক্তার নদীকে।

স্বামী রাজীব হোসেন ও শ্বশুর আবুল হোসেনের হাত থেকে বাঁচতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন সুবর্ণা।  

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এ নিয়ে পাবনা ও ঢাকায় একাধিক সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন তিনি।

এর আগে, ২০১৭ সালের ২২ জুলাই পাবনা সংবাদপত্র পরিষদে এক সংবাদ সম্মেলন করে সুবর্ণা বলেছিলেন, ‘শিল্পপতি স্বামী রাজীব হোসেন ও শ্বশুর আবুল হোসেন ভাড়াটিয়া গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে তাকে নির্যাতন ও হত্যা চেষ্টা করছেন। ’

সুবর্ণা নদীর বড় বোন চম্পা খাতুন জানান, ‘২০১৬ সালে ৬ জুন শহরের ইড্রাল ফার্মাসিউটিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেনের ছেলে রাজীব হোসেনের সঙ্গে ৫ লাখ ১ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয় নদীর। বিয়ের পর থেকেই ৫ লাখ টাকা যৌতুকের টাকার দাবিতে নির্যাতন শুরু করে শ্বশুরবাড়ীর লোকজন। ২০১৭ সালের ৩১ মে সুবর্ণা নদীকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তারা। পরে পাঠানো হয় তালাকনামা। ২০১৭ সালের ৪ জুন পাবনা সদর থানায় নারী-শিশু ও যৌতুক আইনে মামলা দায়ের করেন নদী (মামলা নং-০৮)।
 
চম্পা খাতুন আরো জানান, ‘মামলা করার পর থেকেই শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্বামী মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দিতে থাকেন। মামলা তুলে না নিলে জানে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল তারা।  

চম্পা বলেন, ‘মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন নদী। ’ মামলায় রায় সুবর্ণার অনূকুলে যাওয়ার আশঙ্কায় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা।

বুধবার সকালে ময়নাতদন্তের পর দুপুরে সুবর্ণার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।  

এদিকে, নদীর মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলায় সাবেক স্বামী রাজীব হোসেন, তার বাবা আবুল হোসেন ও তাদের আত্মীয় শামসুজ্জামানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি/তদন্ত) মো. জালাল উদ্দিন মামলা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) রাতে পাবনা পৌর সদরের রাধানগর মহল্লায় আদর্শ গার্লস হাইস্কুলের সামনে ভাড়া বাসায় ফেরার পথে বাসার সামনেই কয়েকজন দুর্বৃত্ত নদীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।  

রাজীবের সঙ্গে বিয়ের আগে সুবর্ণার অন্যত্র বিয়ে হয়েছিল। সেই সংসারের জান্নাত নামে ৬ বছরের মেয়ে রয়েছে। শহরের রাধানগর মহল্লায় আদর্শ গার্লস হাইস্কুলের সামনে পরিবার নিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকতেন নদী।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।