বহু কাঠ-খড় পুড়ে রিকশা, ভ্যান, হেঁটে ও বাসে করে বগুড়া শহরের চারমাথা কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনালে পৌঁছান। কারণ আঞ্চলিক সড়কগুলোয় বাসের তীব্র সংকট।
সোমবার (২৭ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে কর্মস্থল ঢাকায় যেতে এ রিকশাচালক বাস টার্মিনাল আসেন। এরপর যেকোনো ব্যানারের বাসে ঢাকায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাড়তি ভাড়া দিতে না পারায় দুপুর ২টা পর্যন্ত তার বাসে ওঠা হয়নি।
দুপুরে শহরের চারমাথাস্থ কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনাল ও ঠনঠনিয়ার আন্তঃজেলা কোচ টার্মিনালে গিয়ে কর্মস্থলমুখী মানুষের এমন দুর্ভোগের চিত্র জানা যায়। আর কর্মস্থলমুখী এসব মানুষের বেশিরভাগই গার্মেন্টকর্মী ও স্বল্প আয়ের মানুষ।
রিকশাচালক আপেল মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, বাস আসতে দেখলেই থামার জন্য হাত উঠাই। হাতের আঙ্গুল দিয়ে ইশারা দিয়ে ৮শ’ টাকা ভাড়ার কথা জানায়। আমার মতো গরিবের পক্ষে এতো টাকা দিয়ে ঢাকায় যাওয়া সম্ভব না। তাই রাতে ট্রাকে করে ঢাকায় যাওয়ার সুযোগ নেবো। এবার ট্রাকেও ভাড়া বেশি। ট্রাকে ৩শ’ বা এর বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
হামিদা, মর্জিনা, আব্দুল মজিদ, জহুরুল ইসলাম, লাইলি বেগমসহ একাধিক গার্মেন্টকর্মী ঢাকায় যেতে এ বাস টার্মিনালে বাসের জন্য বসে-দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন।
এসব গার্মেন্টকর্মীরা বাংলানিউজকে জানান, ঢাকায় তারা বিভিন্ন এলাকায় গার্মেন্টেসে চাকরি করেন। ঈদের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে বাড়িতে এসেছিলেন। সাধারণত তারা ঈদের ছুটিতেই বাড়ি আসেন। বাবা-মা, ভাই-বোনসহ পরিবারের সঙ্গে ঈদ করেন। ছুটি শেষে আবার কর্মস্থলে ফেরেন।
তারা জানান, এবার ঢাকা থেকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছাতে দূরত্ব অনুযায়ী এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া বাবদ ব্যয় করতে হয়েছে। যাওয়ার পথেও একই অবস্থা। যেকোনো ধরনের বাসে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকার নিচে ওঠা যাচ্ছে না। তাদের ভাষায়, ‘গরিবের যন্ত্রণা কেউ বোঝে না’।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন টিকিট বিক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, চাহিদা মতো সড়কে বাস নেই। মহাসড়কে যানজটের কারণে সঠিক সময়ে বাসগুলো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত কঠোর। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকলেই ওই বাসের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। এসব কারণে বাসের ভাড়া বেশি বলে দাবি তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৮
এমবিএইচ/আরবি/