ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রিমিয়ার ব্যাংকে লুটের ঘটনায় রহস্যের জট খোলেনি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৮
প্রিমিয়ার ব্যাংকে লুটের ঘটনায় রহস্যের জট খোলেনি প্রিমিয়ার ব্যাংকের লোগো

ঢাকা: রাজধানীর বাড্ডা লিংক রোড সংলগ্ন প্রিমিয়ার ব্যাংকের একটি শাখা থেকে অস্ত্রের মুখে ২৩ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের সপ্তাহ পার হলেও রহস্যের জট খোলেনি। ফিল্মি স্টাইলে টাকা লুট করা ওই অস্ত্রধারীকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। দিন-দুপুরে মাত্র একজন অস্ত্রধারী কীভাবে এই ঘটনা ঘটালো এ প্রশ্নেরও কোনো ‍কূল-কিনারাও করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তে এখনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। তবে সম্ভাব্য সার্বিক বিষয়গুলো আমলে নিয়ে তদন্ত চলছে।


 
গত ২০ আগস্ট প্রিমিয়ার ব্যাংকের ওই শাখার ব্যবস্থাপক ফজলুল হককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২৩ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় এক অস্ত্রধারী। ঘটনায় পরদিন ২১ আগস্ট রাতে প্রিমিয়ার ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রাহাত আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাত একজনকে আসামি করে বাড্ডা থানায় একটি মামলা (নম্বর-১৮) দায়ের করেন।
 
মামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন বিকেল ৪টার দিকে একজন অস্ত্রধারী ব্যাংকের ভেতরে ব্যবস্থাপকের কক্ষে যান। এরপর ব্যবস্থাপককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভল্ট রুমে প্রবেশ করতে বলেন। সবাই ভল্ট রুমে যাওয়ার পর অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তি ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টার থেকে ২৩ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় ব্যাংকের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিআর খুলে নিয়ে যান।
 
তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ বিষয় নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের কথা উল্লেখ করে বলেন, বিকেল ৪টার সময় সাধারণত লেনদেন শেষ হওয়ার আগেই ব্যাংকের মূল দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরও বাইরে থেকে কীভাবে অস্ত্রধারী ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশ করলো? এ সময় অন্য কোনো গ্রাহক ছিলেন না। সে সময় ব্যাংকের হিসেব ক্লোজ করার কাজ চলছিলো বলে আমরা শুনেছি।
 
আবার অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তি ব্যাংকের ৬ কর্মকর্তা ও এক নিরাপত্তারক্ষীকে জিম্মি করে ২৩ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেলো। যাওয়ার সময় সিসিটিভির ভিডআরও ‍খুলে নিয়েছে। যথেষ্ট সময় পাওয়া স্বত্ত্বেও নিরাপত্তারক্ষী কেন ওই অস্ত্রধারীকে বাধা দেননি?
 
এমন একটি ঘটনা ঘটানো দীর্ঘ পরিকল্পনার বিষয় এবং কঠিন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে কেউ অস্ত্রধারী ব্যক্তিকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছে কি-না কিংবা ব্যাংকের কেউ সরাসরি জড়িত রয়েছেন কি-না বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কেউ জড়িত রয়েছেন কি-না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
 
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আশরাফুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে উল্লেখ করার মতো এখনো কোনো অগ্রগতি নেই। তবে আমরা সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি।
 
তিনি বলেন, যেহেতু ব্যাংকের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া যায়নি। তাই ব্যাংক ভবনের আশেপাশের অন্যান্য ভবন ও সড়কের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ঘটনার সময় ব্যাংকে উপস্থিত থাকা ব্যক্তিদের কাছ থেকে অস্ত্রধারী ব্যক্তির শারীরিক বর্ণনা নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ঘটনার সময় উপস্থিত ব্যাংকের নিরাপত্তারক্ষী ও কর্মকর্তাদের আলাদা আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য নেওয়া হয়েছে।
 
সবকিছু পর্যালোচনা করে অস্ত্রধারীকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এই ঘটনায় এখনো কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি বলেও জানান এসি আশরাফুল করিম।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৮
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।