ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঐতিহ্যের মোরগ লড়াই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৮
ঐতিহ্যের মোরগ লড়াই মোরগ লড়াই

হবিগঞ্জ: আবহমান বাংলার গ্রামীণ খেলাগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। এখনও কিছু কিছু খেলা চোখে পড়লেও হাতে হাতে মোবাইল থাকায় শিশুরা সেটাও ভুলতে বসেছে।

গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার প্রয়াস থেকে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার জাতুকর্ণপাড়ার আদার বাড়িতে মোরগের লড়াই টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে। রোববার (২৬ আগস্ট) স্থানীয় যুব সমাজের আয়োজনে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করা হয়।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে সাবেক ছাত্রনেতা আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, রোববার টুর্নামেন্টে ৩২টি মোরগ অংশ নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার সুযোগ পেয়েছে ১৬টি। পরে কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিফাইনালের মাধ্যমে দুইটি মেরাগের মধ্যকার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে। এক সপ্তাহ পর অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলা। পরবর্তীতে নির্ধারণ করা হবে সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের তারিখ।

তিনি আরও জানান, হবিগঞ্জের বিভিন্নস্থান থেকে প্রতিযোগিরা মোরগ নিয়ে অংশ নিয়েছেন এতে। খেলায় অংশ নেওয়ার আগে প্রতিজনের কাছ থেকে ৩০০ টাকা এন্ট্রি ফি নেওয়া হয়েছে। ফাইনালে বিজয়ী মোরগের মালিক পাবেন একটি ফ্রিজ। রানার্স আপ মোরগ পাবে টিভি এবং অংশগ্রহণকারী প্রতিজনকে দেওয়া হবে সান্ত্বনা পুরস্কার।

মোরগ লড়াই

আয়োজকরা জানান, মোরগ লড়াইয়ের জন্য ১০ থেকে ১২ ফুট স্কয়ার জায়গা নির্ধারণ করা হয়। মাঝখানে দু’জন মানুষ দু’টি মোরগ হাতে নিয়ে বসেন। খেলার আগে সাধারণত স্থানীয় মুরুব্বীদের নিয়ে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। কারণ, খেলায় কোনো রেফারি নেই। তাই কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আর মাঠে মালিকের পক্ষ থেকে যে মোরগগুলোকে খেলায় তাদের বলা হয় খলিফা। কমিটির নির্দেশ পাওয়া মাত্র শুরু হয় খেলা। লড়াই করতে করতে অনেক সময় হাফিয়ে গেলে বা আহত হয়ে পড়লে তখন গরম পানি দিয়ে মোরগের শরীরটা মুছে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে একটি মেরাগ যখন দৌঁড় দিয়ে পালিয়ে যাবে অথবা নিস্তেজ হয়ে পড়বে, তখন কমিটি ওই মোরগটিকে পরাজিত ঘোষণা করে। তবে ২০ মিনিটের মধ্যে পরাজিত না হলে, খেলা বিরতি দিয়ে ১০ মিনিট পর আবার শুরু হয়।

হবিগঞ্জ খোয়াই থিয়েটারের সভাপতি অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটু বাংলানিউজকে বলেন, গ্রাম-বাংলার চিরায়ত খেলা মোরগের লড়াই। প্রাচীনকাল থেকে এদেশের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে যুবকেরা তাদের বাড়িতে মোরগ পালন করতো লড়াই করে জেতার জন্য। আর বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটের যুগে উঠতি বয়সের যুবকরা মোবাইল ফোনে নানা ক্ষতিকর গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছে। যদি বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই খেলাটির চর্চা অব্যাহত থাকে তাহলে অনেক যুবকই ইন্টারনেটে মরণখেলায় মত্ত না হয়ে সুন্দর ভবিষ্যত গঠনসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad