শুক্রবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে জানা যায় এসব তথ্য।
ভোর থেকেই গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় ভিড় বাড়া শুরু হয়েছে।
বরিশালগামী হানিফ পরিবহনের যাত্রী নাজমুল বাংলানিউজকে বলেন, নির্ধারিত ভাড়া ৫৫০ টাকা। কিন্তু আমার কাছ থেকে ৭৫০ টাকা নিয়েছে। টিকিটে আবার এই অতিরিক্ত ভাড়ার পরিমাণ লেখা নেই। এর আগে আমি সুরভী পরিবহনের কাউন্টারে গিয়েছিলাম। আমাদের রুটে এটা এখন ভালো সার্ভিস দেয়। কিন্তু একই ভাড়ার বদলে তারা পেছনের সিটের ক্ষেত্রে ৮০০ টাকা আর সামনের দিকের ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, গাড়ি ছাড়ার নির্ধারিত সময় থেকে আধা ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। তবু বাসের দেখা নেই। আবার রাস্তায় তাদের লোকাল যাত্রী তোলার ভোগান্তি। ফেরিঘাটের জ্যামের কথাতো বাদই দিলাম।
এ অভিযোগের ভিত্তিতে হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার বাবু অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, ভাড়া অতিরিক্ত নেইনি। শুধু ঈদ বোনাস হিসেবে যে যতো দেন, তাই রাখছি। তাও ৫০ টাকার বেশি না। আর বাসের দেরি হওয়ার কারণ গাবতলী এলাকায় অনেক জ্যাম। গাড়ি ঘুরাতে মিরপুর বাংলা কলেজ থেকে ঘুরে আসতে হচ্ছে। জ্যামের কারণে এই সংক্ষিপ্ত পথ দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই আধা ঘণ্টা বা এক ঘণ্টা দেরি হচ্ছে। তাছাড়া আমাদের বেশিরভাগ বাসের সিট পরিপূর্ণ হয়নি। প্রায় প্রত্যেকটি বাসে ১০টি করে সিট খালি আছে।
যাত্রীদের অভিযোগ- এই সিটগুলো পূর্ণ হলেই বাস ছাড়বে। তাছাড়া গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় ও সামনের রাস্তায় প্রতিটি কোম্পানির বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। গাবতলী পশুর হাট ছাড়াও যা এই সড়কের যানজটের অন্যতম কারণ।
অন্যদিকে, শ্যামলী ও সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার সূত্রে জানা যায়, তাদের কোনো টিকিট বিক্রি বাদ নেই। যাত্রীরা আসছে আর নির্দিষ্ট সময়ে গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে। এ তথ্য যাত্রীসূত্রেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
যাত্রীদের কল্যাণে নিরাপত্তা রক্ষাকারী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশের সঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়া, ফিটনেসবিহীন বাস পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ যাবতীয় ভোগান্তি দূর করার উদ্দেশে রয়েছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি’র (বিআরটিএ) ভিজিলেন্স টিম। এই টিমের প্রধান মোটরযান পরিদর্শক আব্দুল খাবিরু বাংলানিউজকে বলেন, র্যাব-পুলিশের সদস্যরা আমাদের সহায়তা করছেন। বৃহস্পতিবার থেকে আমাদের এই টিম কাজ করছে। এখন পর্যন্ত আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি যাত্রীদের কাছ থেকে। তাছাড়া সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চার্ট আজকের মধ্যেই প্রতিটি কাউন্টারের সামনে লাগিয়ে দেবে বলে জানিয়েছেন পরিবহন মালিক শ্রমিক সমিতির নেতারা।
কিন্তু অভিযোগের বিষয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিআরটিএ’র ভিজিলেন্স টিমে লিখিত অভিযোগ জানাতে হয়। বাড়ি ফেরার পথে লিখিত অভিযোগ করা কীভাবে সম্ভব? আর তাদের (ভিজিলেন্স টিমের) সামনেই তো অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে।
এ বিষয়ে আব্দুল খাবিরু জানান, আমাদের যাত্রীরা যদি একটি চিরকুটে অভিযোগ লিখে দেয় তাতেও হবে। লিখিত ছাড়া আমরা কিসের ভিত্তিতে অ্যাকশনে যাবো। তাছাড়া আমরা ফিটনেসবিহীন বাসের ক্ষেত্রে খুব কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছি।
গাবতলী টার্মিনালে বহু সংখ্যক ফিটনেসবিহীন বাসে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাওয়া ছাড়াও মেরামতের কাজে পরিবহন শ্রমিকদের ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৮
এমএএম/টিএ