ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফেরি চলাচল ব্যাহত, লঞ্চে যাত্রীদের চাপ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৮
ফেরি চলাচল ব্যাহত, লঞ্চে যাত্রীদের চাপ ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে লঞ্চে। ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে নাব্যতা সংকটে ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। ফলে লঞ্চে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। 

ঈদকে সামনে রেখে নৌরুট সচল রাখতে খনন কাজ চললেও সব ফেরি চলাচল এখনও স্বাভাবিক হয় নি। আর তাই গত এক সপ্তাহ ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দূরপাল্লার পরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ির যাত্রীরা।

এছাড়াও পণ্যবাহী পরিবহনগুলোও এ রুট ব্যবহার করতে পারছে না। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় যাত্রীদের ভিড় দেখা দিয়েছে লঞ্চ ও স্পিডবোটে।

বুধবার (১৫ আগস্ট) দুপুর থেকে হঠাৎ করেই বাতাসের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পদ্মা নদী। আর তাই স্পিডবোটে দুপুর থেকেই যাত্রীদের পারাপার কমে যায়। ফলে লঞ্চ ঘাটে দেখা দেয় যাত্রীদের ভিড়।

বিআইডব্লিউটিসি’র কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্র জানায়, ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ও ব্যক্তিগত পরিবহনের যাত্রীদের ঘাট পর্যন্ত এসে লঞ্চে করে পার হতে হচ্ছে পদ্মা নদী। এছাড়া নিয়মিত লঞ্চে পার হওয়া যাত্রীতো রয়েছেই। যে সংখ্যক যাত্রী ফেরিতে পার হতো, তারা এখন লঞ্চে পার হচ্ছে। ফলে লঞ্চ ঘাটে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। এছাড়াও স্পিডবোট ঘাটেও যাত্রীদের ছিলো দীর্ঘলাইন। তবে দুপুর থেকে বাতাসের কারণে পদ্মা কিছুটা উত্তাল হয়ে উঠলে স্পিডবোটে কমেছে যাত্রী পারাপারের পরিমাণ। বর্তমানে এ নৌরুটে ৮৬টি লঞ্চ ও দুই শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটের লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের চ্যানেল মুখে পলি পরে সৃষ্টি হয়েছে নাব্যতা সংকট। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় স্রোতের তীব্রতা। চ্যানেল মুখে ঘূর্ণি স্রোতের কারণে পলি এসে জমা হতে থাকলে সৃষ্টি হয় ডুবোচর। গত ১৫ দিন ধরে চ্যানেল মুখে নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হতে থাকে। একপর্যায়ে বিকল্প চ্যানেল চালু করে ওয়ানওয়ে পদ্ধতিতে ফেরি চলাচল শুরু করে। এতে করে শিমুলিয়া থেকে কাঁঠালবাড়ী আসতে বেড়ে যায় দূরত্ব। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যেতো পদ্মা পাড়াপাড়ে। এর কিছুদিন পরেই চ্যানেল মুখে পানি কমে যাওয়ায় রোরো ফেরি ও দু’টি ডাম্প ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে। নাব্যতা সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় শনিবার (১১ আগস্ট) বিকেল ৫টা থেকে সব ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। ফলে পরিবহন পারাপারে অচল হয়ে পরে এ নৌরুট।

রোববার (১২ আগস্ট) দুপুর থেকে ছোট ফেরিগুলো ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যানবাহন নিয়ে ফের চলাচল শুরু করলেও মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) রাত ১০টা থেকে ফেরি চলাচল ফের বন্ধ রাখা হয়। বুধবার সকাল ৭টা থেকে ৬টি কে-টাইপ  ও ৩টি মিডিয়াম ফেরি চলাচল শুরু করেছে। এদিকে নৌরুট সচল রাখতে ৭টি খননযন্ত্র দিয়ে খনন কাজ অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকাগামী যাত্রী রফিকুল হক বাংলানিউজকে বলেন, বর্ষা মৌসুমে পদ্মা উত্তাল থাকে। এসময় নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি বন্ধ থাকলে লঞ্চে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। ফেরি বন্ধ থাকায় লঞ্চে যাত্রীদের ভিড় বেশি। সব মিলিয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ এ নৌরুটে।

খুলনাগামী যাত্রী মো. হাবিব মিয়া বলেন, প্রতি বছরই নাব্যতা সংকট থাকে। দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। সারা বছরই নৌরুট খনন করেও কেন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না তা বোধগম্য নয়।

কাঁঠালবাড়ী ফেরি ঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মিয়া জানান, সকাল থেকে কে-টাইপ ও ভিআইপি ফেরিগুলো চলছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্সসহ ছোট গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। তবে নাব্যতা সংকট নিরসনের চায়না ড্রেজারসহ ৭টি ড্রেজার খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। উভয় ঘাটেই পারাপারের পরিবহনের দীর্ঘলাইন রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ’র কাঁঠালবাড়ী লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. আক্তার হোসেন বলেন, পদ্মায় কিছুটা ঢেউ থাকলেও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। যাত্রীদের চাপ তুলনামূলক ভাবে কিছুটা বেশি। তবে ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী শৃঙ্খলার সঙ্গে কাঁঠালবাড়ী থেকে লঞ্চ ছাড়া হচ্ছে।

** পদ্মায় নাব্যতা সংকট, ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগের শঙ্কা

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৮
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।