ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শোক দিবস উপলক্ষে হিজড়া শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৮
শোক দিবস উপলক্ষে হিজড়া শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হিজড়া শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

ঢাকা: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার প্রাণের পরে চলে গেলো কে’ গানের সঙ্গে সমবেত নৃত্যের মাধ্যমে শুরু হলো আয়োজন। তারপরই চারিদিকে থ! আর হবেই না বা কেন? হিজড়া জনগোষ্ঠির মানুষগুলোকে রাস্তায় টাকা তোলা বা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাচ্চা নাচানোর যে সংস্কৃতি, তা ভেদ করেই যে এ আয়োজনে নৃত্য পরিবেশন করলেন তারা।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর গ্রিনরোডে অনুষ্ঠিত হলো তৃতীয় লিঙ্গের শিল্পীদের এ আয়োজন। রাজধানীর হিজড়াদের জীবনমান উন্নয়ন এবং সদাচারণ প্রশিক্ষণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে সামাজিক সংস্থা রি-থিংক-বিডি।

তারই অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয় এ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার।

আয়োজনের শুরুতেই নৃত্য পরিবেশন করেন হিজড়া জনগোষ্ঠীর শিল্পী শিশির, জান্নাত, শ্রাবন্তী, সুমি, মাহি, ঐশ্বর্য। এরপর ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেতো বঙ্গবন্ধু মরে নাই’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন লারা ও শিশির। পরে ‘নয়ন তোমারে পায়না দেখিতে’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ গানটির সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন তৃতীয় লিঙ্গের শিল্পীরা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইস্রাফিল আলম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম মাহমুদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রিথিংক বিডির পরিচালক লুলু আল মারজান।

ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা যখন স্লোগান দিতাম তখন আমরা বলতাম, আমি কে তুমি কে বাঙালি বাঙালি। হিজড়া বা নারী পুরুষ বলে কিছু নেই। সকল মানুষ রাষ্ট্রের সমান অধিকারী। বর্তমান সরকার হিজড়াদের ভোটাধিকার দিয়েছে, স্মার্টকার্ড দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রিও পাচ্ছেন। সরকার হিজড়াদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- সংসদ সদস্য ইস্রাফিল আলম। হিজড়াদের জীবনমান বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম মাহমুদ।  

সভাপতির বক্তব্যে রি-থিংকের পরিচালক লুলু-আল-মারজান বলেন, বৃহৎ সমাজের চাপে পড়ে হিজড়া সম্প্রদায় তাদের গুরুর দ্বারস্থ হন একটা নিশ্চিত ও সুন্দর জীবনের আশায়। কিন্তু সেখানেও কখনো কখনো তাদের দ্বার রুদ্ধ হয়ে যায় এবং নিপীড়নের শিকার হতে হয়। সেই ধারাবাহিকতাই একেকজন নিজেই গুরু হয়ে উঠেন। এই যে তাদের ধারাবাহিক জীবনের সংস্কৃতি, সেখান থেকে বের করে নিয়ে আসাই এ ধরনের আয়োজনের মূল লক্ষ্য।

সন্ধ্যায় কবিগুরুর ‘ভেঙেছে দুয়ার, এসেছে জ্যোর্তিময়’ গানটির সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় রি-থিংক আয়োজিত হিজড়া সম্প্রদায়ের শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ভিন্নধর্মী এ সাংস্কৃতিক আয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ০৫১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৮
এইচএমএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।