ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘দেড় সপ্তাহে’ গড়ালো ট্রাফিক সপ্তাহ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
‘দেড় সপ্তাহে’ গড়ালো ট্রাফিক সপ্তাহ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: দেশজুড়ে চলমান ট্রাফিক সপ্তাহের কারণে অনেক ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে। চলমান এ অভিযানকে বেগবান করতে ট্রাফিক সপ্তাহ আরও তিনদিন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

শনিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, গত ৫ আগস্ট শুরু হওয়া ট্রাফিক সপ্তাহের কারণে আমরা অনেক ইতিবাচক ফলাফল পেতে শুরু করেছি।

ট্রাফিক আইন প্রয়োগের কারণে সড়কে শৃঙ্খলায় অগ্রগতি হয়েছে। শৃঙ্খলা আরও টেকসই করতে এ অভিযান চলমান রাখা দরকার বলে মনে করছি। এ অভিযান বেগবান করতে ট্রাফিক সপ্তাহ আরও তিনদিন (১২-১৪ আগস্ট) বর্ধিত করার ঘোষণা করছি।

ট্রাফিক সমস্যা রাজধানীর অন্যতম বড় সমস্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ৪ হাজারেরও বেশি ট্রাফিক সদস্য দিন-রাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। রাস্তার অপ্রতুলতা, খোঁড়াখুঁড়ি, রাস্তার পাশেই শপিং সেন্টারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং আইন না মানার প্রবণতার কারণে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা অনেক কষ্টসাধ্য এবং চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। এতো সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।

ইতোমধ্যে আমরা একটি বার্তা দিতে পেরেছি যে, কোনো ব্যক্তির সামাজিক অবস্থান, পেশা নির্বিশেষে আইন লঙ্ঘনকারী যেই হোক, তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করা হবে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আমাদের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। তাদের বার্তা অন্তরে ধারণ করে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলার স্বার্থে বিষয়টি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ট্রাফিক সপ্তাহের গত ছয়দিনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ডিএমপিতে আইন অমান্য করার অভিযোগে ৫২ হাজার ৪১৭টি মামলা করা হয়েছে। ১১ হাজার ৪০৫ জন চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ফিটনেস না থাকায় ৫ হাজার ৫৭২টি যানবাহন ডাম্পিং করা হয়েছে এবং ৩ কোটি টাকার বেশি জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

অনেক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আইন প্রয়োগ করা হলেও এটি প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এখন থেকে এ বিষয়ে আইন প্রয়োগ আরও জোরদার করার কথাও জানান তিনি।

গত ২ বছরে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহারের দায়ে ৪৪ হাজার ৫৮৫টি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, বিকন লাইট ব্যবহারের দায়ে ৫ হাজার গাড়ির বিরুদ্ধে, উল্টোপথে চলাচলের দায়ে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬১টি গাড়ির বিরুদ্ধে, স্টিকার ব্যবহারের দায়ে ১ হাজার ৪৭টি, কালো গ্লাস ব্যবহারের দায়ে ৬ হাজার ১৬২টি গাড়ি এবং ৪ লাখ মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ সময়ে ১০ হাজারেরও বেশি মোটরসাইকেল ডাম্পিং করা হয়েছে।

ভিডিও মামলা চালু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৯৯ হাজারেরও বেশি গাড়ির বিরুদ্ধে ভিডিও মামলা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ভিডিও মামলার সংখ্যা আরও বাড়বে। ফুটপাতে মোটরসাইকেল চলাচল রোধ করতে ডিএমপি নিজস্ব অর্থায়নে ৪ হাজার ৭৭টি মেটালিক বার স্থাপন করা হয়েছে। ট্রাফিক সচেতনতায় ৩ হাজার ৬৩৯টি বৈঠক করেছি।

ঢাকাবাসীকে আইন মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সবাই আইন না মানলে কাজটা কঠিন হয়ে যায়। আসুন আমরা সবাই আইন মানি এবং অন্যকেও উদ্বুদ্ধ করি। ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার না করে যেখানে-সেখানে রাস্তা পারাপার হলে এখন থেকে আমরা বিভিন্নভাবে আইন প্রয়োগে বাধ্য হবো।

বর্তমানে ট্রাফিক পুলিশের সব মামলায় ইলেক্ট্রনিকস প্রসিডিউর মেইনটেইন করা হয়। তাই এক্ষেত্রে অবৈধ লেনদেনের সুযোগ নেই। তারপরেও ঊর্ধ্বতনরা বিষয়টি খেয়াল রাখছেন।

রাস্তায় শৃঙ্খলা ফেরাতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন অযুহাতে কাউকে রাস্তা অবরোধ করতে দেওয়া হবে না। রাস্তা অবরোধ কোনো প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না। যে কোনো বিষয়ে রাস্তা অবরোধ করার মানসিকতা পরিহার করে আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াই, ট্রাফিক শৃঙ্খলায় পুলিশকে সহায়তা করুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮/আপডেট: ১৬১৮ ঘণ্টা
পিএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।