রানা শেখের জন্ম সনদ ও এসএসসি’র সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য কাগজপত্র দাখিল করে ঢাকার গুলশান-২ এলাকায় ‘টিইউভি রেইনল্যান্ড বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেয় অপর এক যুবক। চাকরির এক মাসের মাথায় সেখান থেকে ল্যাপটপ চুরি করে পালিয়ে যায় সে।
রানা রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের মজলিশপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর শেখের ছেলে।
রানা বলেন, আমি গত নয় মাস ধরে ঢাকায় যমুনা ফিউচার পার্কে ইন্ডিয়ান ভিসা সেন্টারে মেসেঞ্জার হিসেবে চাকরি করছি। ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাস আগে ঢাকার গুলশান এলাকায় আমার জন্ম সনদ, এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট, জীবন বৃত্তান্ত ও চারিত্রিক সনদপত্রের ফটোকপি হারিয়ে যায়। ফটোকপি হওয়ায় তখন আমি বিষয়টি গুরুত্ব দেইনি।
রানা আরও বলেন, আমার বোনের বিয়ে উপলক্ষে শুক্রবার (১০ আগস্ট) ভোরে আমি ঢাকার কর্মস্থল থেকে বাড়িতে আসি। এদিন বিকেলেই টিইউভি রেইনল্যান্ড বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড থেকে দুইজন লোক আমার বাড়িতে আসেন। তারা আমাকে ল্যাপটপ চুরির বিষয়ে বললে আমি অবাক হয়ে যাই। এরপর তারা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এবং আমাকে ভালো করে দেখে নিশ্চিত হন যে- আমি তাদের অফিসের কর্মচারী রানা নই। পরে তারা আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে চলে যান।
টিইউভি রেইনল্যান্ড বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের অ্যাডমিন ডিপার্টমেন্টের অ্যাডমিন অ্যাসিসটেন্ট খোন্দকার সাব্বির হোসেন বলেন, একমাস আগে স্মার্ট ফোর্স আউট সোর্সিং সিস্টেম লিমিটেড নামে একটি এজেন্সির মাধ্যমে আমাদের অফিসে একজন ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট (ক্লিনার) নিয়োগ দেওয়া হয়। সেসময় নিয়োগপ্রাপ্ত ওই যুবক আমাদের কাছে রানা শেখের জন্ম সনদ, এসএসসির সার্টিফিকেট, জীবন বৃত্তান্ত ও চারিত্রিক সনদ দাখিল করে। আমরা তাকে এতোদিন রানা শেখ বলেই জানতাম।
বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) সকালে ওই যুবক অফিস থেকে লক্ষাধিক টাকা দামের একটি ল্যাপটপ চুরি করে পালিয়ে যায়। বিষয়টি অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এরপর অফিসে দাখিল করা তার কাগজপত্র দেখে ও সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে রানার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়।
তিনি বলেন, আমার বাড়িও রাজবাড়ী হওয়াতে রানার কাছ থেকে ল্যাপটপ উদ্ধারের জন্য অফিস থেকে আমাকে দায়িত্ব দেয়। শুক্রবার বিকেলে আমি এক বন্ধুকে নিয়ে রানার বাড়িতে যাই। কিন্তু, সেখানে গিয়ে দেখি আমাদের অফিসের কর্মচারী যেই রানা ল্যাপটপ চুরি করেছে এই রানা সেই রানা নয়। এরপর আমরা বুঝতে পারি রানার কাগজপত্র দাখিল করে প্রতারণার মাধ্যমে ওই যুবক চাকরি নিয়েছিলো। পরে আমরা রানা ও তার পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে চলে আসি।
ঘটনাটি আমরা থানায় জানিয়ে দিয়েছি যাতে রানার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। এখন আমরা স্মার্ট ফোর্স আউট সোর্সিং সিস্টেম লিমিটেডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। কারণ, তারা কোনো ভেরিফাই না করেই একজন প্রতারককে আমাদের অফিসে কাজের জন্য দিয়েছিলো।
স্মার্ট ফোর্স আউট সোর্সিং সিস্টেম লিমিটেড হেড অফ অপারেশন মারুফ আহমেদ বলেন, নাম-ঠিকানা ভেরিফাই না করার কারণেই এই অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা প্রতারক যুবককে খোঁজার চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৮
আরএ