ঘটনার পর লিপিয়ারার স্বামী একই উপজেলার চেংগাড়া গ্রামের সামাদুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়েছে।
শুক্রবার (১০ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার সময় চেংগাড়া গ্রামের বাসস্ট্যান্ড পাড়া এলাকায় সামাদুলের ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
লিপিয়ারা খাতুন গাংনী পৌরসভা এলাকার চৌগাছা গ্রামের মালেশিয়া প্রবাসী মোজাম্মেল হকের মেয়ে ও কুষ্টিয়া মান্নান হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স।
লিপিয়ারার ছোট ভাই আরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় এক বছর আগে আমার বোন লিপিয়ার সঙ্গে চেংগাড়া গ্রামের ইনামুল ইসলামের ছেলে সামাদুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার দাবিতে তার ওপর নির্যাতন চালানো হতো। বোনের সুখের কথা ভেবে আমরা তাকে ২ লাখ টাকা দিয়েছি। তার পরেও সে ক্ষান্ত হয়নি। আরো টাকার জন্য বিভিন্ন সময় চাপ দিয়ে আসছিল। টাকা না দিতে পারলে বোনের ওপর নেমে আসতো অমানুষিক নির্যাতন।
একপর্যায়ে আমার বোন বাদী হয়ে সামাদুল ও তার মা সামেনা খাতুনের বিরুদ্ধে মেহেরপুর আদালতে যৌতুক ও নারী নির্যাতন মামলা করে। বৃহস্পতিবার (০৯ আগস্ট) মেহেরপুর আদালতে মামলার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু জজ না থাকায় মামলার সেদিন শুনানি হয়নি।
শুক্রবার সকালে আমার বোনকে তার স্বামী সামাদুল ইসলাম মামলার আপোষ করার জন্য মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে হত্যা করে মরদেহ ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় প্রতিবেশীরা আমাদের খবর দিলে আমরা তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদহে দেখতে পাই। সেখান থেকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লিপিয়ারার বড় দুলাভাই কুসুম হক জানান, সকাল ১০টার দিকে আমি লিপিয়ারার খোঁজ নেয়ার জন্য সামাদুল ইসলামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সামাদুল ও তার মা জানান, তোমার শ্যালিকা আমাদের বাড়িতে আসেনি। তাকে না পেয়ে আমি ফিরে আসি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এমকে রেজা জানান, এখানে নিয়ে আসার আগেই সম্ভবত তার মৃত্যু হয়েছে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দনাথ সরকার জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৮
আরএ