ডিএনসিসির একটি হিসাব মতে, ঢাকার সড়কে ময়লায় ৯৭ শতাংশই বালু। সড়কে জলাবদ্ধতার যে কারণ, তার পেছনে অন্যতম ড্রেনগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়াটা।
এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এম এ রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, ল্যাবরেটরি টেস্ট ও আমাদের সাধারণ ধারণায় পাচ্ছি ড্রেন চকিংয়ের (বন্ধ) মূল ‘ক্রিমিনাল’ এখন বালু। ঢাকা শহরে যে পরিমাণে বালু জমা হয়, সঠিকভাবে অপসারণ না করা গেলে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখা সম্ভব হবে না। সেজন্য আমরা সিটি করপোরেশন আলোচনা করেছি, প্রাথমিকভাবে ছয়টি রোডে ১০টি মেকানিক্যাল রোড সুইপার নামাবো। মেইন রোডকে ১০টি রোড সুইপার কাভার করবে। রোড সুইপার ছাড়া রাস্তার ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।
প্রকল্প তৈরির কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, উন্নয়ন সহযোগীদের টাকায় এই সুইপারগুলো কেনা হবে।
ধুলোবালি থেকে শুরু করে কঠিন বর্জ্য পরিষ্কার করতে ডিএনসিসিতে এখন কাজ করছে একটি রোড সুইপার। প্রয়াত আনিসুল হক মেয়র থাকাকালে ২০১৬ সালে কেনা এই যন্ত্র একদিকে যেমন অর্থ সাশ্রয় করছে, অন্যদিকে রাস্তাও করছে ঝকঝকে।
ডিএনসিসির তথ্য মতে, প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার ৮৬৩ কিলোগ্রাম বর্জ্য অপসারণ করছে একমাত্র রোড সুইপারটি। এই পরিমাণ বর্জ্য অপসারণ করতে কেবল একদিনেই ৮৬ জন পরিচ্ছন্নকর্মীর প্রয়োজন হতো।
সাধারণত মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, খেজুরবাগান, ক্রিসেন্ট লেক, বিজয় সরণি, ইন্দিরা রোড, গণভবন, সংসদ ভবনের আশপাশে পরিচ্ছন্নতার কাজে এটি ব্যবহার হয়ে থাকে।
উন্নতমানের এ রোড সুইপারটির চেসিস জাপানের হিনো কোম্পানির। আর সুইপার মেশিনটি ব্রিটেনের বিখ্যাত জনস্টন কোম্পানির। তারা তিন বছরের গ্যারান্টি দিয়েছে। এটির দাম চার কোটি ৯৫ লাখ টাকা। থাইল্যান্ডের একটি টেকনিক্যাল টিম যন্ত্রটি পরিচালনার জন্য তিনজনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে গেছে। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ রাখতে পারলে যন্ত্রটি ১০ থেকে ১২ বছর কাজ করতে সক্ষম হবে।
সে হিসাবে ১০টি রোড সুইপার কিনতে প্রায় ৪৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। তবে প্রস্তাবিত ব্যয় এখনও চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করা হয়নি। রোড সুইপার কিনতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে উন্নয়ন সহযোগী খুঁজছে ডিএনসিসি।
রাস্তা পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় কর্মীরা দুর্ঘটনার শিকার হন। বেপরোয়া বাসের চাপায় পড়ে অনেকের অঙ্গহানি এমনকি মৃত্যুও হয়। ডিএনসিসি সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিগত সাত বছরে (২০১২-১৩ থেকে ২০১৮-১৯) ৩০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন এই এলাকায়। এরমধ্যে ১০ জনই নিহত হয়েছেন। অঙ্গহানি হয়েছে আট জনের।
ডিএনসিসির কর্মকর্তারা আশা করছেন, এই রোড সুইপার কেবল সড়ক পরিচ্ছন্নই করবে না, কমাবে অনেক দুর্ঘটনাও।
বাংলাদেশ সময়: ০৬০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৮
এমআইএস/এইচএ/