ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাস চলাচল বন্ধে বিপাকে বরিশালের যাত্রীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৮
বাস চলাচল বন্ধে বিপাকে বরিশালের যাত্রীরা কাউন্টারে বাসের অপেক্ষায় দুই যাত্রী। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: নিরপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের পটুয়াখালী ও ঝালকাঠির অভ্যন্তরীণ এবং দুরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দক্ষিণাঞ্চলের এসব জেলার সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ে। পাশাপাশি যাত্রীরা বাড়তি ভাড়ায় বিকল্প যানবাহনে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করছে। 

পরিবহন সংকটের কারণে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে যানবাহনের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় দুরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় মহাসড়কে নেমে এসেছে স্থবিরতা।

এদিকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।  

রোববার (৫ আগস্ট) সকাল পৌনে ১১টার দিকে বরিশাল নগরের চৌমাথা এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে কর্মসূচি পালন করছে।

এদিকে পটুয়াখালীতে শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে কর্মসূচি পালন করবে বলে জানা গেছে।

বরিশাল নগরের রুপাতলীস্থ মিনিবাস মালিক সমিতির সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন বাংলানিউজকে জানান, নিরাপদ সড়ক সবাই চাই। জীবন দিয়ে গাড়ি চালাতে চালকরাও চায় না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে যেভাবে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে গাড়ি ভাঙচুর করছে তাতে গাড়ি ও যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে চালকরা গাড়ি চালাচ্ছেন না। গত শুক্রবার (৩ আগস্ট) থেকে এ অবস্থা বিরাজ করছে। এতে দুরপাল্লার পাশাপাশি বরিশাল থেকে পটুয়াখালী ও বরগুনার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া বাসস্ট্যান্ড থেকেও অভ্যন্তরীণ ছয় রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বরিশালের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ থেকে অভ্যন্তরীণ ১৫টি রুটে স্বাভাবিক নিয়মে বাস চলাচল করছে বলে জানিয়েছেন জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আফতাব আহমেদ।  

পটুয়াখালী জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধা বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েকদিনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রুটে বাস চলাচলে যেভাবে বাধা দিচ্ছেন এবং গাড়ি ভাঙচুর করছেন তাতে সড়কে বাস চলাচল সম্ভব না। এ কারণে গত শুক্রবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে পটুয়াখালীর অভ্যন্তরীণ ও দুরপাল্লার সব বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।  

ঝালকাঠির জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাহাদুর চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, ন্যায্য হিস্যার দাবিতে গত বুধবার থেকে ঝালকাঠি থেকে আট রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। দাবি না মানা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে এর বাইরে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আমরাও একমত পোষণ করছি। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুস্কৃতিকারীরা প্রবেশ করে গাড়ি ভাঙচুর করছে। আমরা সড়কে পরিবহন ও যাত্রীদের নিরাপত্তা চাই।  

বরিশাল বিভাগীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইমান আলী শরীফ বাংলানিউজকে জানান, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সড়কে বিভিন্ন জায়গায় বার বার ট্রাকের কাগজপত্র দেখাতে হচ্ছে। এর পাশাপাশি সড়কে চলাচলরত ট্রাক ভাঙচুর করায় ক্ষতি হচ্ছে। তাই ট্রাক চালকরা শনিবার (৪ আগস্ট) থেকে সড়কে গাড়ি নামাতে চাচ্ছেন না। এ জন্য বরিশাল থেকে ট্রাক চালানো বন্ধ রয়েছে। চালকদের এ সিদ্ধান্তে বিভাগীয় শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের সমর্থন দিয়েছে।  

তবে এ রকম কোনো বিষয় শোনেননি বলে জানিয়েছেন জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কালাম মোল্লা।

বিভাগীয় ট্যাংক-লরি শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. কালাম হোসেন মোল্লা বাংলানিউজকে জানান, আমরা ট্যাংক-লরির বিষয়টি নিয়ে খুব শঙ্কার মধ্যে রয়েছি। গাড়ি গুলোতে জ্বালানি তেল ভরে স্ব-স্ব ডিপোতে রাখা হয়েছে। বর্তমানে বরিশালের বিভিন্নস্থানে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছে পরিস্থিতি শান্ত হলে গাড়ি গুলো গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০১৮
এমএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।