ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

অষ্টম দিনেও গণপরিবহন শূন্য রাজধানী

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৮
অষ্টম দিনেও গণপরিবহন শূন্য রাজধানী আজও স্থবির রাজধানী/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানী শহর ঢাকার স্থবিরতা অষ্টম দিনে গড়ালো। বাসশূন্য ঢাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। রাস্তায় বিআরটিসির সীমিত সংখ্যাক বাস ছাড়া বেসরকারি কোনো পরিবহন দেখা যায় নি। নগরবাসীর এখন একমাত্র ভরসা রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা ও ট্রাক-পিকআপ। অনেককে দেখা গেছে হেঁটে গন্তব্যের দিকে যেতে।

পরিবর্তীত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই অনেকেই ভোররাতে নেমেছেন রাস্তায়। যে কারণে সকাল থেকেই রাস্তায় জনতার ঢল দেখা গেছে।

সকাল সাড়ে ৮টায় মিরপুর-১০ নম্বরে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও কোনো বাসের দেখা মেলেনি। অথচ এ পথ দিয়ে অনেকগুলো রুটের বাস চলাচল করে। বলা হয় এখানে দাঁড়ালে নাকি নগরীর যে কোনো স্থানে যাওয়ার বাস পাওয়া যায়।

শ্যামলী লিংক রোডে অপেক্ষমান ব্যাংকার মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি চাকরি করেন গুলশানের একটি ব্যাংকে। সকাল সাড়ে ৮টায় থেকে অপেক্ষা করছেন। না কোনো সিএনজি অটোরিকশা ধরতে পেরেছেন, বাস পেয়েছেন। লেগুনা চলাচল করছেন কিন্তু তাতে উঠবার কোনো জো নেই। আগে থেকেই সিট বুকিংয়ের পাশাপাশি পাদানিতেও ঝুলছে তিন-চারজন করে।

সহকর্মী বৃষ্টি শেখ খাদিজা জানিয়েছেন, সকালবেলা মোহাম্মদপুরে বেসরকারি কোনো বাসের দেখা পাননি। পরে বিআরটিসির একটি বাসে অনেক কষ্টে উঠেছেন। তাকে যে পরিমাণ গাদাগাদি জীবন ওষ্ঠাগত হওয়ার অবস্থা। ভাগ্যভালো সকালে ততটা গরম ছিলো না, তাই কিছুটা রক্ষা হয়েছে।

রাজধানীতে চলছে হাতেগোনা কয়েকটা বিআরটিসি বাস/ছবি: বাংলানিউজবিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলায় মিনিট বিশেক অপেক্ষা করে দু’টি বিআরটিসির বাস ও ক্যান্টনমেন্ট মিনিবাস সার্ভিসের একটি বাসের দেখা মিলেছে। এসব এলাকায় হাজার-হাজার যাত্রীকে বাসের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। অনেকে আবার দীর্ঘক্ষণ বাসের অপেক্ষায় থেকে বাসের দেখা না পেয়ে হেঁটে গন্তব্যে রওয়ানা দিয়েছেন।

ঢাকা শহরের অন্যতম রুট প্রগতিসরণীতেও কোনো বাসের দেখা পাওয়া যায় নি। ঢাকার শহরের এ একটি মাত্র রুট যে রুট দিয়ে এখনও দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করে। রোববার (৫ আগস্ট) কোনো বাসের দেখা মেলেনি এ রুটে।

২৯ জুলাই সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় ঘাতক পরিবহন জাবালে নূর বন্ধ ছিলো। ধীরে ধীরে অলিখিত ধর্মঘটে গেছে মালিক-শ্রমিকরা। প্রায় সব রুটেই বাস সংকটের খবর পাওয়া গেছে।

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বাস এভাবে পাকিং করা /ছবি: বাংলানিউজর‌্যাবের হাতে ঘাতক বাস চালক আটকের খবরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যখন কিছুটা স্বস্তির দিকে গড়াচ্ছিলো, তখন দ্বিতীয় দিনের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে আন্দোলনে ঘি ঢেলেছে পুলিশ। আবার তৃতীয় দিনে শনিরআখড়ায় আন্দোলনকারীদের উপর ট্রাক চালিয়ে দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও বিস্ফোরণমুখ করে তোলে। এরপর প্রধানমন্ত্রী ৯ ছাত্রদের নয় দফার মধ্যে বেশকিছু দফা বাস্তবায়ন অন্যগুলো মেনে নেওয়া ঘোষণা দিলেও শান্ত হচ্ছে না পরিস্থিতি। গুমোট পরিস্থিতির কারণে নগরজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।

আবার আন্দোলন উস্কে দেওয়ার জন্য নানা রকম গুজব প্রচারের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অপপ্রচার বন্ধে মোবাইলে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা হয়েছে শনিবার রাতে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০১৮
এসআই/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।